রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরের বাংলা “সন্ত্রাস, হিংসা, দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে।” সে কারণে এখন তাঁর ‘চিত্ত ভয়যুক্ত’, ‘মাথা হেঁট’ হয়ে রয়েছে। মঙ্গলবার রাজভবনে রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবস পালন অনুষ্ঠানে নিজের বক্তৃতায় নাম না করে বাংলার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে এ ভাবেই কটাক্ষবাণ ছুড়লেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের মতের সঙ্গে তারা যে সহমত নয়, তা সাফ জানিয়েছে শাসকদল। তাঁর উদ্দেশে পাল্টা কটাক্ষ করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর ব্রাত্য বসুর সরস মন্তব্য, “বেশি মাথা হেঁট করবেন না। তা হলে সানগ্লাস খুলে পড়ে যাবে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এবং পরে শাসকদলের বিরুদ্ধে রাজ্যে হিংসার অভিযোগ উঠেছে। রাজভবনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের দাবি, “এখনকার বাংলা সেই বাংলা নেই।” মঙ্গলবারের ভাষণে কারও নাম না করে তাঁর পরামর্শ, “এখনও দেরি হয়নি। তবে অনেক দেরি হওয়ার আগে মানুষ চায়, দুর্নীতি শেষ করার জন্য সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা। দুর্নীতি এবং হিংসাকে শেষ করতে মানুষকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত গুরুদেবের বাংলার যে পরিস্থিতি তা ঠিক করতে হবে।”
পাল্টা রাজ্যপালকে জাবাব দিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, “রাজ্যপালের ভাল করে বাংলা শেখা উচিত। রবীন্দ্রনাথ কবিতার লাইন ব্যবহার করার আগে তা বোঝা উচিত।” অপরদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, “রাজ্যপাল বিজেপির সুরে কথা বলেছেন। রবীন্দ্রনাথের অসাম্প্রদায়িক শিক্ষা যদি গ্রহণ করতেন তাহলে আজ বিজেপি-র মুখাপাত্র হতে হত না। আর মাথা হেঁট হওয়ার সময় সানগ্লাস যেন পড়ে না যায়।”
উল্লেখ্য, আজ কবিগুরুর স্মরণে রাজভবনে ২২ শ্রাবণে অনুষ্ঠান ছিল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস, ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ বিশিষ্টজনরা। রবি ঠাকুরের প্রতীকী ছবিতে মাল্যদান করার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বক্তৃতা রাখেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায় উঠে আসে কাবুলিওয়ালা সহ রবি ঠাকুরের একাধিক লেখা ও কাজের প্রসঙ্গ।