রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত পৌঁছল সপ্তমে। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় মামলা করার দাবি তুললেন দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, রাজ্যপাল সংবিধানের ধারা লঙ্ঘন করছেন এই অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপতির কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ধনখড়কে যেন অবিলম্বে রাজ্যপালের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2020/11/WhatsApp-Image-2020-11-26-at-8.33.04-PM-1.jpeg)
এদিন কল্যাণের অভিযোগ, রাজ্যপাল পরপর টুইট করে ‘অপরাধীদের’ আড়াল করার চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের ওই সাংসদ রাজ্যপালের ২২ এবং ২৫ নভেম্বরের দুটি টুইটের উল্লেখ করে বলেন, “রাজ্যপাল যে ভাবে টুইট করেছেন, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে বাধা সৃষ্টি করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ এবং ১৮৯ ধারায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়।” সেইসঙ্গে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সংস্থা ED-র কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত করে গোবিন্দ আগরওয়ালের কাছ থেকে প্রায় ৩.৮৮ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশ। সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপের ধারায় মামলাও রয়েছে। পাশাপাশি সুদীপ্ত রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে রোজভ্যালির এক কর্মীর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মানব ও গরুপাচারে যুক্ত তিনি। ইডি তার বিরুদ্ধে ভুয়ো নথি তৈরির অভিযোগ দায়ের করেছিল বিধাননগর থানায়। এহেন ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশকে ভয় দেখাচ্ছেন রাজ্যপাল।” কল্যাণের প্রশ্ন রাজ্যপাল কেন এই ২ মূল অভিযুক্তকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেন? কেন কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর পুলিশকে বাধা দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন?। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কল্যাণ বলেন, ‘‘জগদীপ ধনখড় রাজ্যপালের মতো ব্যবহার করছেন না। তিনি শুধু অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’’
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2020/11/WhatsApp-Image-2020-11-26-at-8.33.04-PM.jpeg)
এদিকে নাম না করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে পাল্টা আক্রমণ করেন রাজ্যপালও। রাজ্যে পুলিশের রাজনীতিকরণ হচ্ছে, আইনের শাসন নেই বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্যপাল একটি বিবৃতি জারি করে বলেন, “তদন্তের মোড় ঘোরাতে এসব করছে, পাহাড় প্রমাণ ব্যর্থতা ঢাকতে বিকৃত প্রচার করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তাঁর মন্তব্য এসবকে পাত্তা দেওয়ার কোনও মানে হয় না।” অন্যদিকে, এই ইস্যুতে রাজ্যপালের পাশেই দাঁড়িয়েছে বিজেপি।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2020/11/WhatsApp-Image-2020-11-26-at-8.33.03-PM-1.jpeg)
বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আসরে নেমে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। কখনও টুইট করে কখনও আবার পত্রাঘাতে তৃণমূলকে বিঁধেছেন রাজ্যপাল। পাল্টা আসরে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেয় রাজ্য সরকারও। তবে এবার ভোটের মুখে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপালকে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ যা খুবই তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2020/11/WhatsApp-Image-2020-11-26-at-8.33.03-PM.jpeg)
কল্যাণের প্রতিক্রিয়া জানার পর রাজ্যপাল বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘ অবাধ ভোটের সওয়াল করেছিলাম বলেই এত আক্রমণ। জ্বলন্ত ইস্যু থেকে নজর ঘোরানোর এটা একটা রণকৌশল।’’ একইসঙ্গে রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, রাজনৈতিক হিংসায় রাজ্য জ্বললে তিনি চুপ থাকতে পারবেন না।