ভারতকে অন্ধকারে রেখেই গত বছর দোহায় আমেরিকা তালিবানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। তবে কাবুলের ব্যাপারে তারা এখন নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছে, আজ এমনটাই দাবি করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ‘ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ ফোরাম’ আয়োজিত একটি বক্তৃতা মঞ্চে আজ ভার্চুয়ালি ভিডিয়ো মাধ্যমে যোগ দেন এস জয়শঙ্কর। সদ্যই শেষ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর আমেরিকা সফর। আফগানিস্তান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে ভারতের উদ্বেগ একশো শতাংশ প্রতিফলিত হয়েছে বলে দাবি করেছে সাউথ ব্লকের। এই প্রেক্ষাপটেই শনিবার জয়শঙ্করের মন্তব্য,”(আফগানিস্তান নিয়ে) আমাদের প্রত্যেকেরই উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তালিবান দোহাতে ঠিক কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটা আমরা জানি না। আমেরিকাই সবচেয়ে ভাল জানে। সেই চুক্তির অনেক বিষয়েই আমাদের জানানো হয়নি।” এরপরেই আমেরিকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদের মতো অনেক বিষয়েই এখন আমরা পরস্পরকে সহযোগিতা করছি। আফগানিস্তানের মাটিকে সন্ত্রাস ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করা নিয়ে দুই দেশের কড়া মনোভাব রয়েছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট বাইডেন আলোচনাও করেছেন।”
নাম না করেই আজ ফের পাকিস্তানকে বিঁধেছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, “কিছু বিষয় থাকবে যাতে আমরা আরও বেশি করে সহমত হব। আবার কিছু বিষয়ে হব না। কোনও কোনও ব্যাপারে আমাদের অভিজ্ঞতা আপনাদের (আমেরিকার) থেকে আলাদা। আমরা ওই অঞ্চল থেকে তৈরি হওয়া সন্ত্রাসের শিকার। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আফগানিস্তানের কিছু প্রতিবেশী রাষ্ট্র সম্পর্কে আমাদের ধারণা তৈরি হয়েছে।” কাবুলের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, “সে দেশের জমিকে কি আমরা আগামী দিনে সন্ত্রাসের কারখানা হিসেবে দেখতে চাইব? আফগানিস্তানের দিকে তাকালে এটাই মনে হয়, আমাদের সবার উপরেই সেখানকার ঘটনাবলীর প্রভাব পড়বে। আমরা তো ওই অঞ্চলের খুব কাছেই থাকি।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে তালিবানের সাথে আমেরিকার গোপন চুক্তির ফলে আমেরিকার উপর ভারত যে সুপ্রসন্ন নয় এমনটাই বাইডেন সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিল ভারত, এমনটাই মত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের।