দাঁত শিরশিরানির সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। বিশেষ করে শীতে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে টুথ সেনসিটিভিটি বলে। চিকিৎসকের পরামর্শ মানলে দ্রুত এ সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। নির্দিষ্ট কিছু টুথপেস্ট বা মাউথওয়াশ ব্যবহার করলেও এই অসুবিধা এড়ানো যায়। পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায়েও দাঁতের বিরক্তিকর শিরশির ভাব থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এবার আসি, সেনসিটিভিটি আসলে কী? আসলে দাঁতে এনামেল নামক এক প্রকার উপাদান থাকে, যা দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তবে এই উপাদান ক্ষয়ে যাওয়ার কারণে দাঁতের ভেতরে থাকা স্নায়ুগুলো উন্মুক্ত হয়ে যায়। ফলে ঠান্ডা খাবার ও পানীয় পান করার সময় স্নায়ুগুলো সংস্পর্শে এলে শিরশির করে ওঠে দাঁত। এটি বর্তমানে একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।
আমাদের সবচেয়ে উপরের অংশ হচ্ছে এনামেল যাকে আমরা সবাই দাঁত হিসেবে চিনি। এনামেলের ভিতরের অংশ হচ্ছে ডেন্টিন। যদি কোন কারনে এই ডেন্টিন উন্মুক্ত হয়ে যায় তবে সেনসিটিভিটি অনুভূত হবে। ডেন্টিন সরাসরি স্নায়ুতন্ত্রের সাথে যুক্ত। কোনো কিছু ডেন্টিনের সংস্পর্শে আসবে তখন তা সরাসরি উত্তেজনার সৃষ্টি করবে। এটিকে আমরা দাঁতের শিরশিরানি বা সেনসিটিভিটি বলে থাকি।
কি কি কারনে সেনসিটিভিটি হয়?
- দাঁতের ক্ষয় বা ক্যাভিটি হচ্ছে অথবা প্রথম কারণ। দাঁত ক্ষয় হলে বলতে এনামেলের ক্ষয় কে বুঝানো হয়। আর যখন এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখনই ডেন্টিন বাইরে বেরিয়ে আসে এবং শিরশিরানির সৃষ্টি করে।
- অনেক সময় মাড়ির সমস্যা থেকে সেনসিটিভিটি হয়ে থাকে। মাড়ি ফুলে গেলে বা মাড়ির কোনো রোগ থাকলে সেনসিটিভিটি হতে পারে। মাড়ি ক্ষয় হয়েও সেনসিটিভিটি সৃষ্টি হতে পারে।
- এসিডিক খাবার যেমন লেবু জল ইত্যাদি পান করলে সেনসিটিভিটি হতে পারে।
- দীর্ঘদিন মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে সেনসিটিভিটি হতে পারে।
- ভুলভাবে দাঁত ব্রাশ করলে বা শক্ত টুথব্রাশ ব্যবহার করলে দাঁত বা মাড়ি ক্ষয় হয় সেনসিটিভিটি হতে পারে।
- রুট ক্যানেল, ক্রাউন রিপ্লেসমেন্ট বা দাঁতের রিস্টোরেশন করলেও অনেকসময় দাঁতের সেনসিটিভিটি হতে পারে।
- অনেক পুরনো কোনো ফিলিং করানো থাকলে সেনসিটিভিটি সৃষ্টি হতে পারে।
তবে দাঁতের সেনসিটিভিটি সমস্যা বেশি দেখা দিলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত একজন ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন। দাঁতের শিরশিরানি কমানোর উপায় হিসেবে ফিলিং করে নিলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।