স্বর্ণেন্দু দাস, পশ্চিমবঙ্গের কোন ছোট্ট গ্রাম অথবা মফস্বল থেকে কলকাতায় এসে যেসব ছেলেরা হাতে বুম নিয়ে সাংবাদিকতা করার স্বপ্ন দেখে তাদের কাছে এই নামটা যেন একটা আবেগ। স্বর্ণেন্দু দাসের জন্ম হুগলি জেলার সিঙ্গুরের এক কৃষক পরিবারে।দীর্ঘ আট বছর ধরে মারণ রোগ ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে পশ্চিমবঙ্গের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে সাংবাদিকতা করা ৩৫ বছরের স্বর্ণেন্দু দাস ২৩-এ আগস্ট সকাল ছটায় পাড়ি দিলেন চিরঘুমের দেশে।
স্বর্ণেন্দু দাস বি.কম-এ স্নাতক হয়ে, সাংবাদিকতা নিয়েও পড়াশোনা করার পর ২০০৭ সালে সাংবাদিকতায় হাতে খড়ি দেন।
স্বর্ণেন্দু দাসকে বাংলা সংবাদ দুনিয়ায় অলরাউন্ডার ও বলা হত কারণ তিনি সব বিটেই দক্ষতা দেখিয়েছিলেন অতি সহজে। ২০১৪ সালে স্বর্ণেন্দু দাসের শরীরে প্রথম দেখা দেয় মারনরোগ ক্যান্সার, কিন্তু তখন চিকিৎসা করার পর ঠিক হয়ে যায়। গত নভেম্বর মাস থেকেই স্বর্ণেন্দু দাসের শরীর আবার খারাপ হতে শুরু করে, আবার নতুন করে দেখা দেয় ক্যান্সার, মুম্বাই-এ নিয়ে গিয়ে চিকিৎসাও করান তিনি। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বর্ণেন্দু দাসের ক্যান্সারের কথা তুলেও ধরেন তারই এক সতীর্থ, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বর্ণেন্দু দাসের চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছিলেন। স্বর্ণেন্দু দাসের চিকিৎসার জন্য দরকার ছিল বিপুল অর্থের তাই তার বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীরা একসাথে মিলে ক্রাউড ফান্ডিং ও করেন যাতে তাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে নিয়ে আসা যায়। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন স্বর্ণেন্দু দাস, পাড়ি দিলেন অজানার দেশে, রেখে গেলেন বয়স্ক মা-বাবা, স্ত্রী ও তিন বছরের কন্যাকে। তিনি কাঁদিয়ে দিয়ে গেলেন গোটা বাংলা সংবাদ দুনিয়াকে।
এদিন টুইট করে স্বর্ণেন্দু দাসের পরিবারকে সমবেদনা জানান মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শোক প্রকাশ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। ৩৫ বছরেই স্বর্ণেন্দু দাসের লড়াইটা থেমে গেলেও, বাংলা সংবাদ দুনিয়ায় এক লড়াকু মানসিকতা তৈরি করে গেলেন তিনি।