করোনা যেন দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার চূড়ান্ত ব্যর্থতার চিত্র সাধারণ মানুষের কাছে সুস্পষ্ট করে তুলেছে। চারিদিকে এত মৃত্যু, অক্সিজেন-বেডের হাহাকার,চুল্লির সামনে সারি সারি মৃতদেহের ছবি এখনও সবার মনেই অক্ষত হয়ে আছে। আর এই ব্যর্থতায় যেন চোখ খুলে দিয়েছে কেন্দ্রের। তাই এবার দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নের লক্ষ্যে মোটা অঙ্কের আর্থিক প্যাকেজ দেবে কেন্দ্র। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৪০২ কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। এই অর্থ চার বছরে খরচ করতে হবে। সমগ্র দেশের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৭০ হাজার ৫১ কোটি টাকা।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/09/covid-1620540569.jpg)
নবান্ন ও স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের আওতায় রাজ্যগুলির সার্বিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক । যাতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও ন্যূনতম পাঁচটি শয্যার ব্যবস্থা,অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা থাকে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীর বক্তব্য, “কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪ হাজার ৪০২ কোটি টাকার প্যাকেজ দেওয়া হবে। এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ শতাংশ অর্থ গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে খরচ করা হবে। বাকি ৩৭ শতাংশ অর্থাৎ ১ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা শহরাঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে খরচ করতে হবে।” অজয়বাবুর কথায়, এটি একটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রকল্প। অর্থদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, “এতদিন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জন্য অর্থ বরাদ্দ করত কেন্দ্র। কিন্তু করোনা সংক্রমণে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা কাটতেই এই পদক্ষেপ।”
প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যদপ্তর তরফ থেকে একটি রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১,৩০০ সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এইসব সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে অন্তত পাঁচটি করে শয্যা রাখা আবশ্যক। রাখতে হবে সংক্রামক রোগের রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থাও।যেসব শতাধিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভাড়াবাড়িতে রয়েছে এবং যেসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থা অত্যন্ত জীর্ণ সেইসব অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক ও বিডিওদের তত্ত্বাবধানে সরকারি জমিতে নতুন করে এগুলি গড়ে তোলা হবে। কল্যাণীর জিনোম সিকোয়েন্স ল্যাবরেটরির মতো একটি অত্যাধুনিক পরীক্ষাগারও গড়ে তোলার কথা রয়েছে। আপাতত প্রাথমিক সিদ্ধান্ত কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে এই ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা হতে পারে।