প্রজাতন্ত্র দিবসের সকাল থেকেই অশান্ত হয়ে উঠল রাজধানী। পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস উপেক্ষা করেই প্রতিবাদী কৃষকরা লালকেল্লায় ঢুকে পতাকা ওড়ায়। এদিন কৃষকদের আটকাতে নানারকম কৌশল নিলেও কার্যত ব্যর্থ হয় দিল্লি পুলিশ প্রশাসন। সবশেষে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীর একাংশে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোও। মূলত সিংঘু, গাজিপুর, টিকরি সীমান্ত, মুবারক চৌক ও নাঙ্গলাই সীমান্তে মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে নেট পরিষেবা। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা বাহিনীও।

এদিকে, পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হতেই স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা ও দিল্লি পুলিশ কমিশনার এস এন শ্রীবাস্তবকে নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রথমে ঠিক হয়েছিল দিল্লি সীমান্তেই ট্রাক্টর মিছিল করবে প্রতিবাদী কৃষকরা। সেইমত সীমান্তেই বাড়তি পুলিশ দিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে শুরু করে দিল্লি পুলিশ। তবে বাস্তবে তা উল্টে যায়। দিল্লির অন্দরে ফাঁক পেতেই রে রে করে ঢুকে আসে ট্রাক্টর মিছিল সমেত প্রতিবাদী কৃষকরা। তাদের বাগে আনতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। তবে কিছুতেই আটকানো যায়নি। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত, যেমন আইটি মোড়, নয়ডা মোড়, এসবিটি মোড়ে পুলিশের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় তাদের। কৃষকদের শান্ত থাকতে আসরে নামেন তাদের আন্দোলনকে সমর্থনকারী দুই মুখ্যমন্ত্রী, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত। কৃষক নেতারাও তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা দেন। কিন্তু তাতেও দমেনি প্রতিবাদী কৃষকরা।

কৃষকদের শান্ত থাকার আবেদন করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও। তবে আন্দোলনকারীরা লালকেল্লায় কীভাবে পৌঁছল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। একইসঙ্গে এই পরিস্থিতির পরেও কেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চুপ রয়েছেন সে প্রশ্নও তোলেন। অন্যদিকে, কৃষকদের শান্ত থাকার আর্জি জানান কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধিও৷ টুইটে তিনি লেখেন, হিংসা কোনও সমস্যার সমাধান নয়৷ কেউ আহত হলে, ক্ষতি হলে আমাদের দেশের৷ দেশের স্বার্থের কথা ভেবে কৃষি আইন প্রত্যাহার করা উচিত৷ উল্লেখ্য, অশান্তি চলবাকালীনই ট্রাক্টর উল্টে মৃত্যু হয় এক কৃষকের। যদিও কৃষকদের অভিযোগ, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের কাছে পুলিশ পথ আটকানোর জন্য গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিই ট্রাক্টরে লেগে উল্টে যায়। তাতেই ট্রাক্টরের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই প্রতিবাদী কৃষকের।