মহালয়ার পর থেকেই গোটা কলকাতা যেন পুজোর মেজাজে। কিন্তু এই উত্তেজনায় বাড়াচ্ছে উদ্বেগও। দেশের সামগ্রিক করোনা সংক্রমণের নিরিখে কলকাতায় সংক্রমণ বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনক। দেশের যে পাঁচটি রাজ্যে এখনও ৬০ শতাংশ মানুষ প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ টিকা পাননি, সেই তালিকায় নামে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরও। তাই পুজোর দিনগুলিতে ভিড় করে পথে জনগণের ঢল নামার ক্ষেত্রে কলকাতাবাসীকে ফের একবার সতর্ক করে দিল কেন্দ্র। দেশে সংক্রমণ তুলনামূলক ভাবে কমে এলেও এখনও বিভিন্ন রাজ্যের ২৮টি জেলায় সংক্রমণের হার পাঁচ থেকে দশ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। কেন্দ্রের ওই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র জেলা হিসাবে উদ্বেগ বৃদ্ধি করছে কলকাতা। উৎসবে জন সমাবেশ হলে সেই সংক্রমন এক জায়গায় স্থির না থেকে ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ তৃতীয় ঢেউ এমনটাই আশঙ্কা স্বাস্থ্যমহলের।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লভ আগরওয়াল শুক্রবার তাই ভার্চুয়াল মাধ্যমে আনন্দোৎসবে যোগ দেওয়ার কথা বলেন সাধারণ মানুষকে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বাড়তি সমস্যা হল, টিকাকরণের দিক থেকে দেশে শেষ পাঁচে রয়েছে রাজ্য। গোটা দেশে অন্যান্য রাজ্যে প্রথম ডোজ প্রতিষেধক দেওয়ার জাতীয় গড় ৭১ শতাংশ, অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডে ৬০ শতাংশ মানুষ এখনও প্রথম ডোজই পাননি। নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পলের দাবী, ইতিমধ্যেই অনেক ছোট রাজ্য টিকাকরণে (প্রথম ডোজ) একশো শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে। বড় রাজ্যগুলিও প্রায় ৯০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। কিন্তু এই পাঁচটি রাজ্যে টিকা নেওয়ার প্রশ্নে মানুষের মধ্যে এখনও বিস্তর অনীহা রয়েছে। রাজ্য সরকারকেই এই অনীহা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এখন টিকা সরবরাহেরও কোনও সমস্যা নেই। রাজ্য-কেন্দ্র আলোচনা করে টিকাদানের হার বাড়ানো প্রয়োজনীয়। যদিও এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য-কর্তাদের পাল্টা যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় টিকাদান যাতে সমান গতিতে এগোয় সেই দিকে সুষ্ঠ ভাবে লক্ষ রেখেছে সরকার। অধিকাংশ রাজ্যে মানুষ প্রথম ডোজ পেয়ে বসে আছেন, কিন্তু দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে সময় পেরিয়ে গেলেও টিকা পাচ্ছেন না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দুটি ডোজকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।