বেলা শেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন,প্রখ্যাত নাট্যকর্মী ও অভিনেত্রী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত তথা অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্তের মা। কিছুদিন আগেই বাংলা চলচ্চিত্র জগতকে এক বিপুল ক্ষতির মুখে ফেলে চির বিদায় নিয়েছিলেন “বেলাশেষে”র ‘বিশ্বনাথ’ তথা বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আর এবার চলে গেলেন আরতিও। আর বাস্তবের দুনিয়ায় রুদ্রপ্রসাদ হারালো স্বাতীলেখাকে। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের থেকে বেশি নাট্য সমাজে দাপট ছিল এই অভিনেত্রীর। গত মাসেই একাত্তরের গণ্ডি পার করেছিলেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন প্রখ্যাত এই অভিনেত্রী। চিকিৎসাও করানো হচ্ছিল বেসরকারি হাসপাতালে। কয়েক মাস আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি,তবে কিছুদিন আগেই হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে পুনরায় হাস্পাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। তবে এবার আর চট করে বাড়ি ফিরতে পারলেন না। দীর্ঘ ২৫ দিন ধরে হাসপাতালে একাগ্রচিত্তে লড়াই করলেন তিনি ,তবে শেষ পর্যন্ত বশ্যতা স্বীকার করতেই হল। হাসপাতাল সূত্রে খবর আজ দুপুরেই হার্ট অ্যাটাক হয় অভিনেত্রীর আর তারপরই সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
অভিনেত্রীর জীবনাবসান হল বটে, তবে নাট্য সমাজ এবং বাংলা চলচ্চিত্র জগতে যে ভাবমূর্তি তিনি গঠন করে গেলেন তা মুছে ফেলা খুব একটা সহজলভ্য কাজ হবে বলে মনে হয় না। সাতের দশকে এলাহাবাদের নাট্যমঞ্চ দিয়েই আত্মপ্রকাশ করেছিলেন অভিনেত্রী। ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী ছিলেন তিনি। এলাহাবাদ থেকে কলকাতায় এসে কলকাতার বিখ্যাত নাট্য দল “নান্দীকারে” যোগদান করেন তিনি। দীর্ঘ পথ চলা নান্দীকারের হাত ধরেই। নাট্যমঞ্চে নাটকের কোন সময় কোন সঙ্গীত পরিচালনা করতে হবে সে বিষয়ে এক অসম্ভব নৈপুন্যতা ছিল এই অভিনেত্রীর। পাশাপাশি পিয়ানো এবং তবলাবাদক বললেও খুব একটা মন্দ হবে না। জীবনের শেষের দিকে এসে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র করেন তিনি, তার মধ্যে “বেলাশেষে” ইতিমধ্যেই সকলের মনে দাগ কেটেছিল । নবীন-প্রবীণ সকলের মনে একই রকম দক্ষতা দিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ইতিমধ্যেই বেলা শুরু এবং ধর্মযুদ্ধ নামে দুটি অভিনীত চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। তার আগেই চলে গেলেন অভিনেত্রী। অসম্ভব প্রতিভাবান এই নাট্য ব্যক্তিত্বের জীবনাবসানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নাট্য সমাজ তথা বাংলা চলচ্চিত্র জগতে।