ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে শিবরাত্রি ব্রত পালন করা হয়। গৃহীরা যেমন শিবের পুজো করেন তেমনি সন্ন্যাসীদের কাছেও শিবরাত্রি একটা মহোৎসব। শিবরাত্রি আসলে সন্ধে থেকে ভোর পর্যন্ত রাতের চার প্রহরের পুজো। সারাদেশব্যাপী এই পুজো শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। বিশেষত উত্তর ভারতের সমস্ত পার্বত্য অঞ্চল গুলিতে চার ধাম আছে তাতে বিশেষ ভাবে ভীড় দেখতে পাওয়া যায় আজকের দিনে। শুধু তাই নয় হরিদ্দার থেকে শুরু করে বেনারস ঋষিকেশ সমস্ত জায়গায় আজ ভক্তবৃন্দের ঢল নামে।
শুধু দেশ নয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলেও আজকের দিনে অনুষ্ঠিত হয় মহা শিবরাত্রি। মহাসমারোহে ছুটে আসেন ভক্তেরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। যার মধ্যে সবথেকে পরিচিত নাম তারকেশ্বর । এখানে প্রতি বছর শয়ে শয়ে ভক্তের সমাগম ঘটে । অনেকে আবার পেয়ে হেঁটে কাঁধে বাঁক নিয়ে বাবার দর্শনে আসেন । আমরা যদি তারকেশ্বর থেকে একটু এগিয়ে বর্ধমানের দিকে যাই তাহলেই দেখতে পাব অম্বিকা কালনা নামক একটি স্টেশন এর কাছাকাছি ‘১০৮ শিব মন্দির’ । যেখানে বাবা ভোলানাথের ১০৮ খানা ছোট ছোট গর্ভগৃহ রয়েছে এবং মধ্যে শিবলিঙ্গ । সেখানকার ভিড়ও আজকের দিনে দেখার মত । তার থেকে আরও কিছুটা দূরে নবদ্বীপ ধাম স্টেশনে নামলেই ‘বুড়ো শিবের মন্দিরে’র দর্শন পাওয়া যাবে। পাওয়া যাবে ‘ত্রিলোকেশ্বর মন্দিরে’র দর্শনও । কথিত আছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এই ত্রিলোকেশ্বর শিব। আমরা যদি একটু গেদে বর্ডার এর দিকে চলে যাই তাহলে দেখতে পাব শিবনিবাসের অতি প্রাচীন শিব মন্দির। মোটামোটি একই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে দেশ থেকে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় ।
কলকাতার কথা বললেই আজকের দিনে শোভাবাজারের ‘ভুথনাথ’ মন্দিরের কথা বলতেই হয় । সেখানে আজকের দিনে রীতিমত ভোর থেকে লাইন পড়ে বাবার মাথায় জল ঢালার জন্যে । পাশেই ‘বুরো শিব তলা’র মন্দির । যেখানে সিঁড়ি দিয়ে উঠে বাবার মাথায় জল ঢালতে হয়, কারণ শিবলিঙ্গের আকার বিশাল । সভাবতই আজকের দিনেও ব্যতিক্রম নয় এই দৃশ্যের ।
আজ যাত্রীদের মহাসমারোহে ভরে উঠবে গোটা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শিব মন্দির। যদিও কোভিড বিধি মানার প্রচেষ্টা থাকছে সম্পূর্ণভাবে। মুখে মাস্ক এবং হাতে স্যানিটাইজার থাকা বাধ্যতামূলক। সরকারের তরফ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।