প্রবল হড়পা বানে বিধ্বস্ত নেপাল ও ভুটান। ভুটানের রাজধানী থিম্পু থেকে ৬০কিলোমিটার দূরে লায়া শহরের নিকটবর্তী একটি জায়গায় ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত ছত্রাক সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। রাতে তাঁবু ফেলে সেখানেই ছিলেন তাঁরা। কিন্তু বুধবার মধ্যরাতের কিছু পরে হঠাৎই হড়পা বান নামে পাশের নদীতে। সেই হড়পা বান ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাঁদেরকে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় ১০ জনের। আহত ৫জন।
ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে আনতে পাঠানো হয়েছে দুটি হেলিকপ্টার।ভুটানের সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে দিকে রওনা হয়েছেন। কাছাকাছি সড়ক থেকে ১১ ঘণ্টা হেঁটেই শুধুমাত্র ওই এলাকাতে পৌঁছান সম্ভব বলেই জানা গেছে। ভুটান ও প্রতিবেশী নেপালের গ্রামবাসীরা প্রতি বছর কর্ডিকিপস নামক ছত্রাক সংগ্রহ করতে সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে যান। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে তিন-চার কিলোমিটার উচ্চতায় মানব স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে কথিত এই ছত্রাক পাওয়া যায়, বিশ্ববাজারে যা বহুমুল্য। এই ছত্রাক সংগ্রহ করতে গিয়েই দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী একটি উপত্যকায় একটি ঝর্ণার পাশে তাঁবু ফেলেছিলেন এই গ্রামবাসীরা। রাতে এই ঝর্ণাটিই হড়পা বানে ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাঁদের।
অন্যদিকে আবার লাগাতার বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি নেপালের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা দিল কুমার তামাং জানান, চীনের তিব্বত অঞ্চলের সীমান্তবর্তী সিন্ধুপালচক জেলায় রাতভর বৃষ্টির পর মেলামচি নদীতে হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়। যার ফলে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। নিখোঁজ আরও বহু মানুষ। সম্পুর্ন ভাবে জলগ্ন হয়ে রয়েছে এই অঞ্চলটি। ভয়াবহ বন্যার রূপ নিয়েছে পরিস্থিতি। হঠাৎ আসা এই হড়পা বানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার বাড়িঘর। শুধু মেলামচি নয়, নারায়নী নদীর তীরবর্তী মানুষদের জন্যও সতর্কতা জারি করেছে নেপাল সরকার। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নারায়নী নদীও।
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত তিনদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টির ফলেই এহেন দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে বলেই মনে করছেন আবহবিদরা।