করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় নাজেহাল গোটা দেশ। সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪ লক্ষের দোরগোড়ায় । এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি রুখতে টিকাকরণে জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্যমহল। কিছুদিন আগেই কেন্দ্র সরকার ঘোষণা করেছিল যে ১লা মে থেকে দেশের ১৮ বছর বয়সের ঊর্ধ্বের জনগনকে টিকা দেওয়া হবে। এই অবস্থায় একের পর এক রাজ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিল যে হাতে পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নাগরিকদের জন্য নির্ধারিত ১ মে থেকে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু করা অসম্ভব। এই তালিকায় শুধু বিজেপির বিরোধীদল দ্বারা শাসিত রাজ্য নয় বরং রয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যও । এই রাজ্যের তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পাঞ্জাব, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ ও কেরলের মতো রাজ্য গুলি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়ে দিয়েছেন যে , “১ মে থেকে ১৮- ৪৫ বছর বয়সি মানুষদের জন্য টিকাকরণ শুরু করা সম্ভব নয়। তবে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সীদের জন্য যে টিকাকরণ চলছিল তা চলবে।
দেশের সবচেয়ে বড়ো ভ্যাকসিন উৎপাদক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, মহারাষ্ট্র সরকারকে ৩ লক্ষ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে তারা। কিন্তু মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছে, “রাজ্যে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু করার জন্য ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টিকার ডোজ প্রয়োজন। সেখানে শুধুমাত্র ৩ লক্ষ ডোজ নিয়ে টিকাকরণ শুরু করা অসম্ভব।”
দেশের একমাত্র সিপিআইএম শাসিত রাজ্য কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন “যে সমস্ত বয়স্কদের দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োজন শুধু তাঁদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে”। তিনি আরও বলেন “দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকাকরণ করা এখন সম্ভব নয়।” টিকাকরণ শুরু না করার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পাঞ্জাব ও মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি থেকেও।
বুধবার ২৮ এপ্রিল কো-উইন পোর্টাল খুলে দেওয়া হয় ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের করোনার টিকার জন্য নাম নথিভুক্ত করার জন্য। বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৩৩ লক্ষ মানুষ নাম লিখিয়েছেন। সেই সংখ্যাটা প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে। কিন্তু রাজ্যগুলির হাতে এই টিকাকরণ কর্মসূচির জন্য পর্যাপ্ত টিকাই পৌঁছয়নি। তার উপর টিকার দাম নিয়েও নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। চাপে পড়ে টিকা উৎপাদক কোম্পানিগুলির দাম কমালেও চাহিদার তুলানায় জোগান কতটা মিলবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দেশজুড়ে অমিল করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ রেমডেসিভিরও। সেই ঘাটতি খানিক পুরণ করতে বাংলাদেশ ও আমেরিকার থেকে রেমডেসিভির আমদানি করছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে ভারতকে ভ্যাক্সিন তৈরির কাঁচামালও পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন বাইডেন।