‘আগে বাঁচার অধিকার দেওয়া হোক’, মণিপুর ক্যাম্পে ক্ষোভ! এম ভারত নিউজ

admin

১৮ বছরের ডিমা হিংসার মাঝেই স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেছে…

0 0
Read Time:4 Minute, 15 Second

কারোর পরিবারের লোকজনকে চোখের সামনে হত্যা করা হয়েছে। কারোর মা–বোনকে উলঙ্গ করে হাঁটানো হয়েছে। কারোর বা বাড়িঘর, স্বপ্ন সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে হিংসার আগুনে। কিন্তু শান্তি ফেরাতে আসেনি কেউ। যাদের ভোট ভিক্ষার ঝুলি ২০১৯ সালে ভরিয়ে দিয়েছিল মণিপুরের মানুষ, তারা সবাই এখন নিখোঁজ বলেই দাবি মণিপুরবাসীর।

কোনও মতে ক্যাম্পে মাথা গুঁজে দিন কাটছে ২৪ হাজার মানুষের। ক্যাম্পে থাকা মানুষরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলছেন– ‘যে এলাকায় শান্তি ফেরানো সম্ভব হয়নি সরকারের পক্ষে, সেই এলাকায় ৯৪ টি বিশেষ পোলিং স্টেশন তৈরি করে কোন লজ্জায় ভোট চাওয়া হচ্ছে? মণিপুরের ক্যাম্পের অসহায় মানুষদের বক্তব্য, ভোটাধিকারের আগে বাঁচার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক আমাদের।’

৪২ বছরের নবি ১১ মাস আগে ঘরছাড়া হয়ে এখনও ত্রাণ শিবিরে থাকছেন। তাঁর বক্তব্য, ”যে সরকার মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার দেয়নি আমাকে, তারা আমার ভোটাধিকার নিশ্চিত করছে। আমার চোখের সামনে আমার বাড়ি পুড়িয়ে ছাই করা হয়েছে। রাতারাতি পরিবারের সঙ্গে এলাকা ছাড়তে হয়েছে। এটাও জানি না, আমার পোড়া বাড়িতে কিছু পড়ে রয়েছে কিনা। কেন আমি ওই এলাকার প্রার্থীর জন্যে ভোট দেব? যে এলাকাটাই এখন আর আমার নয়। প্রহসন করা হচ্ছে। আমাদের কাছে ভোট এখন অর্থহীন। ভোটাধিকার চাই না। রাজ্যে শান্তি ফেরানো হোক আগে।” এই বক্তব্য শুধু নবির নয়, ক্যাম্পে থাকা আরও অনেকের।

২০১৯ এর লোকসভায় মণিপুরের ৮২ শতাংশ ভোটার বুথে গেছেন। কিন্তু এবারের ভোট তাদের কাছে– পূর্ণিমার চাঁদকে ঝলসানো রুটির মত করে দেখা। ১৮ বছরের ডিমা হিংসার মাঝেই স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেছে। নিজের ভবিষ্যত নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সে। আপাতত ক্যাম্পের ছেলেমেয়ের পড়াশুনো শেখাচ্ছে। তার বক্তব্য, ”আমি মনে করি, এই পরিস্থিতিতে ভোট জরুরি নয়। আমি আমার প্রথম ভোট কেন নষ্ট করব? যাব না ভোট দিতে।”

৪৫ বছরের কে এইচ খাম্বা জানিয়েছেন, ‘ক্যাম্প থেকে ১২০ কিমি দূরে তার বাড়ি ছিল। ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা করতেন তিনি। খবর পেয়েছেন, তার সবকটা গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। খাম্বা বলেন, ”আমরা যাদেরকে ভোট দিয়েছিলাম, তারা আমাদের জন্যে কি করল? ভোট দিতে যাব কিনা এখনও ভাবছি। তবে আমরা মনে করি না এটা ভোটের জন্য সঠিক সময়”।’

গত বছরের ৩ মে কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মারা যান কয়েকশ’ মানুষ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাড়ি-ঘর। কিন্তু, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার কেউই শান্তি ফেরাতে পারেনি এখনও। ত্রাণ শিবিরের হাজার হাজার মানুষকে ১১ মাসেও বাড়ি ফেরাতে পারেনি সরকার।

আরও পড়ুন

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Next Post

রাতভর থানায় ডেরেক, মঙ্গলবারও ধর্না জারি তৃণমূলের। এম ভারত নিউজ

এদিন সকাল থেকে মন্দিরমার্গ থানার বাইরেই ধর্নায় বসেন...

Subscribe US Now

error: Content Protected