নিয়োগ দুর্নীতির জল মাপতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। উঠে আসছে একের পর এক নাম। এবার সেই তালিকায় নতুন তৃণমূলের হুগলির আরও এক যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তে নেমে তাঁর সম্পর্কে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কেবল চাকরি বিক্রি নয়, সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মীদের বদলির জন্যও মোটা টাকা নিতেন শান্তনু। উদ্ধার হয়েছে বদলি সংক্রান্ত নথিও। হুগলিতে নিজের অফিসে বসে শান্তনু সেই সব আবেদন পত্র গ্রহণ করতেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। চাকরি বিক্রি করে শান্তনুর কামানো টাকার হদিশ পেতে এবার ইডির টার্গেট শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, প্রিয়াঙ্কার নামে প্রচুর সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। এর আগেও প্রিয়াঙ্কাকে তলব করেছেন ইডি আধিকারিকরা। একাধিকবার ইডির নোটিশ এড়িয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। চলতি সপ্তাহে ফের তলব করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কাকে।
ইডি সূত্রে খবর, চাকরি পেতে শান্তনুর কাছে সুপারিশ করতেন তৃণমূলের সদস্যরা। শান্তনুর হাত ঘুরে দলীয় সদস্যদের সুপারিশ পৌঁছেছে দলের নেতাদের কাছে। শান্তনু কার কাছে পৌঁছে দিতেন সেই নথি সেই বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছে ইডি। শান্তনুকে জেরা করে সেই সকল নেতাদের নাম জানতে চাইছে ইডি। শান্তনুর কথায় ১৯ কোটি টাকা তাপস মণ্ডল কুন্তলকে দিয়েছিল। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত নগদ ও সোনা উদ্ধার মিলিয়ে ১১১ কোটি টাকা উদ্ধার ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
হুগলি জেলায় কান পাতলে শোনা যায়, এলাকায় ব্যাপক দাপট এই শান্তুনুর। রিসর্ট, ধাবা আর কত কী! গত কয়েক বছরে এই শান্তনুর সম্পত্তির পরিমাণ যেভাবে বেড়েছে, তা দেখে হতভম্ব তদন্তকারীরাও। বারুইপাড়ায় রেস্তঁরা ও একটি ধাবা রয়েছে। ২০২১ সালে ওই ধাবা তৈরি হয়। বলাগড়ে গঙ্গার ধারে বিশাল রেস্তঁরা রয়েছে। নামে বেনামে বহু জমি রয়েছে। রাজারহাট নিউটাউনে রয়েছে ফ্ল্যাট ও জমি। এছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী ও তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কাছে ওই বিপুল টাকা এল কোথা থেকে? তারই তল পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।