সিঙ্কহোল গিলে খাচ্ছে তুরস্কের কনিয়া রাজ্যের ভূমি । এম ভারত নিউজ

user
0 0
Read Time:4 Minute, 29 Second

গর্ত বা সিঙ্কহোল গিলে খাচ্ছে তুরস্কের কনিয়া রাজ্যের ভূমি। এতটাই চওড়া ও গভীর এই সিঙ্কহোল যে গিলে নিতে পারে আস্ত একটি বাস। যতই দিন বাড়ছে বাড়ছে এইসব গর্তের সংখ্যাও। গত একযুগে অবস্থার অবনতি ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। ২০২০ সালে এই অঞ্চলে সিঙ্কহোলের সংখ্যা ছিল ৩৫০ টি। এবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৬০০ টি। কিন্তু দৈত্যাকার গর্ত গুলো তৈরী হওয়ার কারণ কী? তুরস্কের কনিয়া রাজ্যটি পাউরুটি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত, তাই পাউরুটি রাজ্য ( ব্রেড বাস্কেট ) নামেও পরিচিত। অর্থাৎ এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমানে গম উৎপাদিত হয়। যতদূর চোখ যায় শুধুমাত্র গমের ক্ষেতই চোখে পড়ে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অঞ্চলটিতে দিন দিন খরা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এই অঞ্চলের চাষিদের মতে খরা ক্রমে বেড়েই চলেছে ও তারা আসন্ন বিপদের জন্য গভীরভাবে চিন্তিত। তাঁদের চিন্তা এই নিয়েও যে এই সিঙ্কহোল হামাগুড়ি দিয়ে ছুটছে তাঁদের বসবাসের এলাকার দিকেও।

তীব্র খরার প্রভাবে সেচের জন্য ভূগর্ভস্ত জলের ওপর নির্ভরশীলতাও বাড়ছে। মাত্রাতিক্ত জল উত্তোলনে ভুগর্ভস্থ জলের স্তর ইতিমধ্যে অনেক নিচে নেমে গেছে ফলে, মাটির অভ্যন্তরে ফাঁকা স্থানের আবির্ভাব হচ্ছে। আবার কৃষকরা জল উত্তোলন করে প্রায়ই ক্ষেতের কিনারায় ডোবা তৈরী করে জমা করে রাখেন। মাটির শক্তি না থাকায়, ডোবার স্থানে দেখা দিচ্ছে ভূমিধস। গড়ে ১০ মিটার চওড়া ও ১৫০ মিটার গভীর এইসব গর্ত ভরাট করা সম্ভব নয়। কারণ গর্ভের নিচের দিক বেশ চওড়া ও অস্থিতিশীল।কৃষকদের পক্ষ্যে অন্যভাবে জলের ব্যবস্থা করা খুবই মুশকিল ও তা খরচ সাপেক্ষ্য নয়। কিন্তু তারা যদি ক্রমাগত ভূগর্ভস্থ জলের ওপরেই নির্ভর করতে থাকে তাতে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না, তবে এই ক্ষেত্রে কৃষকরাও অপারক। বিশেষজ্ঞরা চাইছে সরকার যেন এই দিকে আরও বেশি করে নজর দেয়, তাঁরা এই দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী করছে ট্যুরসের জল ব্যবস্থা নীতিকে। তুরস্কের এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান Baki Remzi Suicmez এর মতে যদি ঠিকমত নজর না দেওয়া হয় এই খরা বিপদ ডেকে আনবে কৃষকদের জন্য, তার মত কোরোনা মহামারীতে যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে তার চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে এই সমস্যা।

পূর্বে কনিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে এই ধরণের সিঙ্কহোল দেখা যেত। কিন্তু জযবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে মনুষ্য বসতির কাছাকাছি এই ধরণের সিঙ্কহোলের উদ্ভব হচ্ছে। ফলে এই অঞ্চলের মানুষ ও গবাদি পশুর জীবন এখন হুমকির মুখে। এখনো পর্যন্ত এই অঞ্চলে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটে নি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছে হতাহতের ঘটনা অবশ্যম্ভাবী। সিঙ্কহোল তৈরির হার যে শুধুমাত্র তুরস্কেই বৃদ্ধি পাচ্ছে তা নয়। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইতালি, স্পেন এবং রাশিয়াও মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে মনে হলেও প্রকিতপক্ষ্যে এটা মানবসৃষ্ট দুর্যোগ। কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য দায়ী একমাত্র মানুষ এবং ফলাফল ভোগ করতে হবে মানুষ সহ পুরো জীবনকুলকে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
100 %

Leave a Reply

Next Post

হড়পা বানে বিধ্বস্ত নেপাল -ভুটান, দুদেশে মৃত প্রায় ২০ । এম ভারত নিউজ

প্রবল হড়পা বানে বিধ্বস্ত নেপাল ও ভুটান। ভুটানের রাজধানী থিম্পু থেকে ৬০কিলোমিটার দূরে লায়া শহরের নিকটবর্তী একটি জায়গায় ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত ছত্রাক সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। রাতে তাঁবু ফেলে সেখানেই ছিলেন তাঁরা। কিন্তু বুধবার মধ্যরাতের কিছু পরে হঠাৎই হড়পা বান নামে পাশের নদীতে। সেই হড়পা বান ভাসিয়ে নিয়ে […]

You May Like

Subscribe US Now

error: Content Protected