এ যেন এক অসম লড়াই, বিধাতার সাথে লড়াই করে জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকা হয়তো একেই বলে। জীবনযুদ্ধে ঐন্দ্রিলা লড়াই প্রেরণা যোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে, কি করে হেরে গিয়েও বারবার ফিরে আসা যায়। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ফেসবুক তথা সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রীর চলে যাওয়ার ভুয়ো খবর । এই নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সব্যসাচী থেকে শুরু করে বহু বিশিষ্ট মহল । ভুয়ো খবর ছটানোর এই তালিকা অনেক পরিচিত মানুষও সামিল ছিলেন যাঁদের মধ্যে অনেকেই খবরটি কেবলই গুজব বুঝে পোস্ট আবার ডিলিটও করে ফেলেন । সেই ভুয়ো খবর ছড়িয়ে RIP লিখতে শুরু করেন অনেকেই। ঐন্দ্রিলার বন্ধু-প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরীও ফেসবুকে বার্তা দেন, ‘আরেকটু থাকতে দাও ওকে.. এসব লেখার অনেক সময় পাবে’।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী দোলন রায়। তাঁর কথায়, শোক আগে পাথর করত, এখন শুধুই ফেসবুক করায় ।
অভিনেতা সৌরভ দাস প্রথম থেকেই পাশে রয়েছেন ঐন্দ্রিলার । আর এই ঘটনায় তিনিও যথেষ্ট আঘাত পেয়েছেন । তিনি অনুরোধ করেছেন যাতে এই ধরনের ভুয়ো খবর না ছড়ানো হয় ।
জীবনযুদ্ধে ঐন্দ্রিলা লড়াই হল এক রূপকথার কাহিনী। আর এই লড়াইকে অপমান করে যারা সত্যিটা না জেনে এই ধরনের গুজব রটাচ্ছে তাঁদের উপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ টলিপাড়ার অপর অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ও । তিনিও তাঁর চাঁচাছোলা পোস্টে রীতিমত ধুয়ে দিয়েছেন সকলকে ।
জীবনযুদ্ধে বিধাতার সাথে প্রথম ঐন্দ্রিলা লড়াই শুরু হয় ২০১৫ সালে। সেই সময় চুটিয়ে টলিউডে অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করছিলেন ঐন্দ্রিলা। কাজ করতে করতে ঐন্দ্রিলা মাঝেমধ্যে হাঁপিয়ে উঠছিলেন কিন্তু প্রথমদিকে সেই ভাবে পাত্তা না দিলেও পরবর্তীকালে তিনি ডাক্তারের কাছে যান। ডাক্তার তাঁকে পরীক্ষা করতে বললে, দেখা যায় ঐন্দ্রিলার বোনম্যারো ক্যান্সার হয়েছে। শুরু হয় জীবনযুদ্ধের সাথে লড়াই চলে কেমোথেরাপি। ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা।
বিধাতা একবার পরীক্ষা নিয়েও ছাড়েননি। ফের ২০২১ সালে ঐন্দ্রিলার ব্রেন ক্যান্সার ধরা পড়ে। জীবনযুদ্ধে তাঁকে বারবার পরীক্ষা দিতে হলেও, সব সময় তাঁর পাশে সহযোদ্ধা হিসেবে পাশে ছিলেন ভালোবাসার মানুষ অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী। এখানেই শেষ হয়নি। ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেয়ে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিলেন ঐন্দ্রিলা। হঠাৎ করে ১লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোক হয় ঐন্দ্রিলার। হাওড়ার এক বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ঐন্দ্রিলাকে। কোমায় চলে যান অভিনেত্রী, তাঁকে রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। বুধবার সকালে ফের দুবার হার্ট অ্যাটাক হয়। ঐন্দ্রিলা্র জীবনযুদ্ধে যিনি সবসময় পাশে থেকে তাকে শক্তি দিয়ে গেছেন সেই সব্যসাচী চৌধুরীই এখন দেখভাল করছেন তাঁর। যাতে একটা মিরাকেল হয় সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন তিনি । রয়েছেন তার অনুরাগীরাও, বাংলার সমস্ত মানুষের, ‘MBharat’ পরিবারও মিরাকলের অপেক্ষায়।
আরও পড়ুন: আসছে পুষ্পা ২