নাম বদল করা হল ঐতিহ্যবাহী শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেসের। পুরনো নামের জায়গায় লেখা আছে “হাওড়া বোলপুর স্পেশাল”। ট্রেনের নাম তো বদল হয়েছেই, সেই সঙ্গে কামরার ভিতর থেকে উধাও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি, তাঁর আঁকা ছবির প্রতিলিপি এবং শান্তিনিকেতনের ছবিও । এই নিয়ে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া।

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে নেমে বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে অতি নাটকীয় নৈকট্য তুলে ধরার মরিয়া চেষ্টায় মজে রয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল। প্রশ্ন উঠছে, স্টেশনের নাম বদলের আবহে তবে কি এবার ট্রেনের নামও বদলে ফেলা হল? তা-ও আবার কবিগুরুর শান্তিনিকেতনের নামবাহী গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের? লকডাউনের পর থেকে ‘শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস’ চলছে ‘হাওড়া-বোলপুর স্পেশাল’ নামে। ওই ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় ভিতরের দরজার দু’পাশে এবং চার দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথের আঁকা ছবির প্রতিলিপি ও শান্তিনিকেতন আশ্রমের ছবি লাগানো থাকত। এখন আর সেসব ছবি চোখে পড়ছে না।
এমনকি রেলের কোচের গায়ে ট্রেনের নামের জায়গায় লেখা ‘দীনদয়ালু কোচ’। প্রায় সাড়ে তিন দশকের পুরনো শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস থেকে এ ভাবে কবিগুরুর স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা নিয়েই প্রতিবাদে সরব বোলপুর-শান্তিনিকেতনবাসী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে ওই পোস্ট। বক্তব্য সমর্থন করছেন অনেকেই। বাঙালি ও বাংলার সংস্কৃতির প্রতি নিজেদের ভালবাসার প্রমাণ দিতে কেন্দ্রের শাসক দল উঠেপড়ে লেগেছে, অন্য দিকে নীরবে চলছে বঙ্গসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর সৃষ্টির স্পর্শ মুছে ফেলার অপচেষ্টা ? এমন ভাবেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অনেকেই। ওদিকে রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তখন থেকেই দূরপাল্লার অসংরক্ষিত এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য নির্মিত দীনদয়ালু শ্রেণির এলএইচবি কোচ ব্যবহার শুরু হয়। তার ভিতরে কবিগুরুর ছবি নেই, নেই তাঁর আঁকা বা শান্তিনিকেতনের ছবিও। এই ঘটনা তাই নিতান্তই পরিস্থিতির কারণে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়।