গোলাগুলি, ড্রাগ কেনাবেচা, প্রকাশ্যে খুন এসব আমরা সাধারণত সিনেমার পর্দাতে দেখেই অভ্যস্ত। কিন্তু এ ঘটনা যেন হার মানায় বলিউডের প্রথম সারির অ্যাকশন থ্রিলার ছবির প্লটকেও। আট মাসের গর্ভবতী এক মহিলাকে জনসমক্ষেই গুলি করে পালাচ্ছে এক ব্যক্তি। মহিলার পুরুষ সঙ্গী বাধা দিতে এলে গুলি করা হল তাকেও! এমনই লোমহর্ষক ঘটনার স্বাক্ষী থেকেছে দিল্লি। জনসমক্ষে দিনের আলোতেই ঘটেছে এই ঘটনা। যা ধরা পড়েছে CCTV ফুটেজে।
ঘটনাটি দিল্লির হজরত নিজামউদ্দিন এলাকার। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ রাস্তার পাশেই চেয়ারে বসে ছিলেন সাইনা এবং তাঁর পুরুষ সঙ্গী। হঠাৎ করেই সেখানে এসে উপস্থিত হয় এক ব্যক্তি। এর পরই সাইনাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সে। ঘটনার সময় আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন সাইনা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। সাইনাকে বাঁচাতে গিয়ে গুলি লেগে আহত হন সাইনার বর্তমান সঙ্গীও। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি সাইনারই চতুর্থ স্বামী ওয়াসিম।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় স্থানীয় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরই উঠে আসতে থাকে নানা তথ্য, যার ফলে কার্যতই কপালে চিন্তার ভাঁজ দিল্লি পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর ২৯ বছর বয়সী ওই মহিলা ড্রাগ ডিলার ছিলেন। এলাকায় তিনি পরিচিত ছিলেন ড্রাগ কুইন নামেই। তাঁর একাধিক সম্পর্ক এবং বিয়ের কথাও জানা গিয়েছে। অভিযুক্ত ওয়াসিমের সঙ্গে সাইনার বিয়ে হয় এক বছর আগে। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই ড্রাগ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। কিন্তু মাত্র কিছুদিন আগেই আটমাসের গর্ভবতী হওয়ায় জামিনে মুক্তি পান তিনি।সাইনার প্রথম দুই স্বামীও তাঁকে ছেড়ে বাংলাদেশে চলে গিয়েছিল। তৃতীয়বার মহিলা বিয়ে করেন দিল্লির এক কুখ্যাত ড্রাগ ডিলার শেখকে। শেখ ‘ড্রাগ কিং’ নামেই পরিচিত এলাকায়। কিন্তু NDPS অ্যাক্টে শেখ গ্রেপ্তার হওয়ার পরই সাইনা আবার বিয়ে করেন ওয়াসিমকে। কিন্তু শেখ জেলে যাওয়ার পরই শেখের ড্রাগ ব্যাবসার দায়িত্ব নিয়ে নেন সাইনা। এর ফলেই ওয়াসিমকে বিয়ে করার কিছুদিনের মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে।
সাইনা জেলে থাকার সময়ই সাইনার বোন রেহানার সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় ওয়াসিমের। কিন্তু সাইনা ছাড়া পাওয়ার পরই অসুবিধা তৈরি হতে থাকে সেই সম্পর্কে। এর পরই সাইনাকে খুনের প্ল্যান বানায় ওয়াসিম। সাইনা ততদিনে থাকতে শুরু করেছিলেন তাঁর নতুন সঙ্গীর সাথে। এরপরই মঙ্গলবার সকালে সাইনার বাড়িতে পৌঁছে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় ওয়াসিম। ঘটনার পরই নিজামুদ্দিন থানায় গিয়ে দুটি পিস্তল সমেত আআত্মসমর্পণ করে সে।পুরো ঘটনার পিছনে সাইনার বোন রেহানাই ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।