৯ জানুয়ারী, শনিবার, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে পশ্চিম কালিমান্টান প্রদেশের পন্টিয়ানাক যেতে গিয়ে শ্রীবিজয়া এয়ার সংস্থার একটি বোয়িং ৭৩৭-৫০০ বিমান নিখোঁজ হয়। সূত্রের খবর মেম্বার সহ বিমানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৬২ জন। জানা যাচ্ছে বিমানে ছিল এক সসদ্যজাত শিশুও । যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ওই বিমানে থাকা সকলের পরিবার পরিজন।
শনিবার বিকেলে ৬টা ৩৭ নাগাদ সোকানো-হট্টা বিমানবন্দর থেকে বোয়িং ৭৩৭-৫০০ বিমানটি যাত্রা শুরু করে। বিমানটির মোট ৯০ মিনিট ওড়ার কথা ছিল। মাত্র ৪ মিনিট ওড়ার পরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ হারায় বিমানটি। ইন্দোনেশিয়ার বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২:৪০ মিনিটে বিমানটির সঙ্গে শেষ যোগাযোগ করা গিয়েছিল। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটব়াডার ২৪’ জানিয়েছে, তাদের তথ্য বলছে বিমানটি এক মিনিটের কম সময়ের মধ্যে ১০,০০০ ফিট নিচে নেমে আসে। হঠাৎই র্যাডারের বাইরে বেরিয়ে যায়। উড়ানটি শেষবার সংযোগ হওয়ার সময়ে ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে বিমানটির দূরত্ব ছিল ১১ হাজার ফিট। তাই বিমানটি সম্ভবত সমুদ্রে পড়ে গিয়েছে, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সমুদ্র থেকে মৎস্যজীবীদের হাতে এমন কিছু উঠে এসেছে, যা দেখে বিমানের ধ্বংসাবশেষ বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি কমিশন এবং ইন্দোনেশিয়ার সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সি এবিষয়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। শ্রীবিজয়া এয়ারের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি, “তদন্ত চলছে” এটুকুই জানিয়েছে তারা।
শ্রীবিজয়া ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম কম বাজেট উড়ান সংস্থা। দেশে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশে প্রায় ১৯টি বোয়িং বিমান পরিচালনা করে স্উইজায়া। ২৬ বছরের পুরনো এই বিমানটির যান্ত্রিক সুরক্ষা নিয়ে এর আগেও প্রশ্ন উঠেছিল। তবুও সংস্থাটি বিমানটিকে ওড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রসঙ্গত ২০১৮-তে অক্টোবরে এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিল ইন্দোনেশিয়া। সেবার লায়ন এয়ার বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান ভেঙে পড়ে জাভা সাগরে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৮৯ জনের। সেই বিমানও উড়েছিল জাকার্তা থেকেই। বিমান ওড়ার মাত্র ১২ মিনিট পরই ভেঙে পড়ে ওই বিমান। এরপর আরেকটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ধ্বংস হয়েছিল ইথিওপিয়ায়। পরপর এই দুর্ঘটনার জন্য বোয়িং সংস্থাকে আড়াই হাজার ডলার জরিমানা দিতে হয়েছিল। তারপর ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের উড়ান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালে পের ওড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট বদনাম রয়েছে।
নিখোঁজ হয়ে যাওয়া বিমানটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স না অন্য কোনও ধরণের বিমান, এই বিষয়ে সংশয় থাকায় সূত্রে জানা গেছে এদিন যে বিমানটি নিখোঁজ হয়েছে সেটি ম্যাক্স ক্যাটেগরির নয়।