ভারত চায় প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে কিন্তু চিন বারবার আগ্রাসনের চেষ্টা চালানোতেই প্যাংগং, গালওয়ানের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা বেড়েছে। পূর্ব লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার লোকসভায় একথা বললেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এদিন ভারতীয় সেনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে রাজনাথ বলেন, ভারতীয় সেনা চিনকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। গালওয়ানে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু চিনের পক্ষে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার যেখানে সংযম দেখানোর দরকার, জওয়ানরা সেটাই করেছে। শুধু সংসদ নয়, সারা দেশবাসীর ভারতীয় সেনার পাশে দাঁড়ানো উচিত। তিনি আরও বলেন, ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা অমীমাংসিত। তবু ’৯৩ ও ’৯৬ সালে দ্বিপাক্ষিক যে সীমান্ত সমঝোতা হয়েছিল, বেজিং যে তার শুধু লঙ্ঘন করেছে তা নয়, গত এপ্রিল মাস থেকে ওয়েস্টার্ন সেক্টরে লাদাখে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করেছে। পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করছে, হামলাও চালিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, এর মধ্যে জুন মাসেই সব থেকে বড় হামলা চালিয়েছে চিনা ফৌজ। তবে তার যোগ্য জবাবও দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এমন জবাব, যাতে ভারী ক্ষতি হয়েছে চিনের। এই প্রসঙ্গেই রাজনাথ সিংহ জানান, “প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ও তাদের ভূখণ্ডের দিকে প্রচুর সেনা ও অস্ত্র মজুত করেছে চিন। পূর্ব লাদাখ, গোগরা, কোঙকা লা, প্যাঙ্গং লেকের উত্তর ও দক্ষিণ তীরে বেশ কিছু সংঘাতের ক্ষেত্র তথা ফ্রিকশন পয়েন্ট তৈরি করেছে।”

তবে সংসদে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, লাদাখ সীমান্তে পাল্টা প্রস্তুতি রেখেছে ভারতও। যথাযথ জবাব দিতে সেনা মোতায়েন যেমন বাড়ানো হয়েছে তেমনই অস্ত্রের মজুতও রয়েছে পর্যাপ্ত।
চিন ভারতের ৩৭ হাজার স্কোয়ার কিলোমিটার দখল করে রেখেছে। তা ছাড়া পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৫১৮০ স্কোয়ার কিলোমিটার জমি পাকিস্তান চুক্তি করে চিনকে বেচে দিয়েছে। সেই সঙ্গে অরুনাচল সীমান্তে ৯০ হাজার স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকা তাদের ভূখণ্ড বলে দাবি করছে বেজিং। প্রতিরক্ষামন্ত্রী এদিন সংসদে যা বলেছেন তা কেবল সামরিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ নয়। কূটনৈতিক ভাবেও এর গুরুত্ব রয়েছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলও তাকিয়ে রয়েছে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ নিয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে মোদী সরকার কী বার্তা দেয়।