নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ আগে তৃণমূল করতো, এখন ‘মীরজাফর দাদা’র হাত ধরে বিজেপিতে যাওয়া ওই ‘হাইব্রিড’ নেতা বাঁকুড়ার আখখুটার মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে, থ্রেট করেছে। বাঁকুড়ার অম্বিকানগরে এক দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই ভাষাতেই সদ্য দলত্যাগ করা নেতা বিদ্যুৎ দাসকে আক্রমণ করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, তিনি ওই গ্রাম থেকে দলীয় কর্মসূচি সেরে ফিরে আসার পরই গ্রামবাসীদের ভয় দেখানো হচ্ছে।
তৎক্ষণাৎ বিষয়টি রানীবাঁধের আই.সিকে জানিয়েছেন সাংসদ। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে তৃণমূল যে আন্দোলন গড়ে তুলবে তার জন্য বিজেপির পাশাপাশি পুলিশও ‘দায়ী’ থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এদিন প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকে সাংসদের হুঁশিয়ারি, এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কেউ ‘চুড়ি পরে’ বসে থাকবেন না।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে জঙ্গলমহলে গেরুয়া শিবিরের কাছে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে ঘাসফুল শিবির। এবার সেই হারানো জমি পুনরুদ্ধারে যখন তৎপর শাসক শিবির ঠিক তখনই জয়ন্ত মিত্র, বিদ্যুৎ দাসের মতো ‘দাপুটে’ নেতা দল ছেড়েছেন। এই অবস্থায় জঙ্গলমহলের রানীবাঁধ বিধানসভা দখলে রাখা শাসক দলের কাছে ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যাঁর বিরুদ্ধে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এমন অভিযোগ তুলছেন, সেই বিদ্যুৎ দাস তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কল্যাণবাবু যা বলছেন ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’। মিথ্যা কথা বলে তাকে ‘ফাঁসানো’ কিম্বা ‘খুন’ করার চক্রান্ত থাকতে পারে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, এর জবাব মানুষ দেবেন। তিনি আতঙ্কিত যে কোন সময় ‘হামলা’র মুখে পড়তে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিদ্যুৎ দাস।
এবিষয়ে বিজেপির বাঁকুড়া জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, তৃণমূল সাংসদ হাতে চুড়ি পরার কথা বলে ‘মায়েদের অসম্মানিত করছেন উনি। ওনাদের ‘দূর্বল’ ভাবছেন। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ যারাই তৃণমূল ছেড়ে আসছেন, তাদের সবাইকেই ‘কেস’ দিয়ে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। হয়তো কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও আমাদের দলে আসার চেষ্টা করেছিলেন, সুযোগ না পেয়ে সেই রাগেও তিনি এসব কথাবার্তা বলছেন।