শুভেন্দু অধিকারী, লক্ষীরতন শুক্লর পর এবার মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছুদিন ধরেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দল ত্যাগের আশংকা নিয়ে জল্পনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। সেই জট কাটিয়ে এবার নিজের মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘোষণা করলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি শুক্রবার রাজভবনে যান তিনি। এদিন বনমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দিনের পর দিন অপমানিত হয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে। সহ্যের সীমা পেরিয়েছিল। তাই মন্ত্রিত্ব ছাড়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাঁকে।
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরেই ‘বেসুরো’ ছিলেন বনমন্ত্রী। সূত্রের খবর, এবারে ডোমজুড়ের বিধায়কের দল ছাড়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র। খুব তাড়াতাড়িই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে রাজীবের, এমনই মত রাজনৈতিক মহলের।
এদিন সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন রাজীব। ফেসবুকে তা নিয়ে ‘আবেগ ঘন’ পোস্টও লেখেন। তারপরেই রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করতে যান তিনি। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজীব। বলেন, ‘‘অনেক বেদনা নিয়ে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলাম। সম্প্রতি সতীর্থদের কথায় অত্যন্ত আহত হয়েছি। ব্যক্তিগত আক্রমণও করা হয়েছে। আর নিতে পারছিলাম না, বিশ্বাস করুন। তবে আমার নেত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’ তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন, তাকে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ দেওয়ার জন্য ।
রাজীবের অভিযোগ, ‘‘আড়াই বছর আগে আচমকা দফতর বদল করে দেওয়া হয়েছিল। অত্যন্ত খারাপ লেগেছিল। সেই সময় ন্যূনতম সৌজন্যটুকুও দেখাননি মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে উত্তরবঙ্গে বৈঠক করছিলাম তখন। টিভিতে দেখে জানতে পেরেছিলাম, আমার দফতর বদল হয়েছে। সে দিনই ইস্তফা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু উনিই নিরস্ত করেছিলেন।’’ এমনকি ফেইসবুক লাইভে এসে ও নিজের ক্ষোভ উগ্রে দিয়ে তিনি বলেন , এই মুহূর্তে দল সত্যিই সাধারণ মানুষের থেকে বেশ কিছুটা দূরে সরে এসেছে সে ক্ষেত্রে দলের উচিত সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। পাশাপাশি তিনি এও বলেন বহুবার সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়ে করতে পারেননি তিনি আহত হয়েছেন তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
রাজীব প্রসঙ্গে এদিন প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সাংসদ সৌগত রায় বলেন, এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিত ছিলই। পাশাপাশি রাজীবের বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি রাজীব কোনও কাজও করেননি বলে অভিযোগ করেন সাংসদ। যদিও এ ব্যাপারে রাজীব বলেন, ‘‘মানুষ বিচার করবে কী কাজ করেছি। যত দিন বাঁচব, বাংলার মানুষের জন্যই কাজ করব। এদিকে, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজীব চলে গেলেও দলে কোনও প্রভাব পড়বে না।