ইয়াস পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে গতকালই রাজ্যে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিস্থিতি মোকাবিলার ব্যাপারে এদিন তাঁর বৈঠক করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু গতকাল বৈঠকে যোগ দেননি মমতা। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে ৫ মিনিটের সাক্ষাতে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব জমা করেই বেরিয়ে আসেন তিনি। এরপরই সমালোচনার ঢেউ ওঠে বিরোধী শিবিরে। এদিন আবারও পূর্ব মেদিনীপুর সফরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরে এসে সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা ছিল তাঁর। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে গতকালের ঘটনারই পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে শোনা গেল তাঁকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন “সত্যিটা সকলের জানা দরকার। আমার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বা স্বরাষ্ট্রদপ্তর একতরফাভাবে খবর প্রচার করা হচ্ছে। আমার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে এই কাজ।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন “যশ বিধ্বস্ত এলাকায় আমার পরিদর্শনের সূচি ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী আচমকা নিজের সূচি ঘোষণা করেন। উনি অন্য রাজ্য সফরে গিয়েছিলেন। আমার রাজ্যে এসেছিলেন বিমান ধরার জন্য।
কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের কথা বলা হয়। আমাদের অনেক জায়গা ঘোরার ছিল। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, সাগর, দিঘা। মাঝে কলাইকুন্ডা যাওয়া কঠিন ছিল। তবু উনি আসছেন, ওঁকে সম্মান দিয়েই তাই দেখা করতে, আলোচনা করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সাগরে গিয়ে শুনি, ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে ওঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য। রাস্তায় আমরা অপেক্ষা করছিলাম। আমি সফর কাটছাঁট করে দেখা করি। কিন্তু উনি কলাইকুন্ডায় আগেই পৌঁছে গেছিলেন। সেখানে গিয়ে এসপিজিকে ১০ মিনিট পর বলি, দেখা করতে দেওয়া হোক। ১ মিনিটের জন্য সময় চাই রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। এসপিজি জানান, ১ ঘণ্টা বাদে উনি কথা বলতে পারবেন। আমরা তারপরও অপেক্ষা করি। শুনলাম, কনফারেন্স রুমে বৈঠক করছিলেন। আমি ও আমার মুখ্যসচিব সেখানে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিজেপির নেতা, বিরোধী দলনেতা রয়েছেন। তাও বলি, ঠিক আছে, পরে আমরা দেখা করব। বলি, আমাদের দিঘা যেতে হবে, আবহাওয়া ভাল না। আমরা এতগুলো জায়গায় ঘুরেছি, তারপর এখানে আসা কঠিন ছিল। এটুকু বলে আমি রিপোর্ট দিই। অনুমতি নিয়ে জানতে চাই, দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠক আছে, আমি কি যেতে পারি। অনুমতি নিয়েই গিয়েছি। তাহলে বলা হচ্ছে কেন যে বৈঠক আমি এড়িয়ে গিয়েছি?”
এরপরই অভিযোগের তীর ছুঁড়ে মমতা বলেন “গত সপ্তাহেই তো উনি গুজরাট পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।সেখানে কি বিরোধী দলনেতা ছিলেন? উনি যদি এতই স্বচ্ছ হন, তাহলে নিজের রাজ্যে করেন না কেন?” “আমরা অনুমতি নিয়েই বেরিয়ে এসেছিলাম” একথা বারবার বলতে শোনা যায় মমতাকে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই বহুদিক দিয়েই কেন্দ্র রাজ্য সংঘাতের দাম চোকাচ্ছে রাজ্য। বলতে গেলে কোনো সহায়তাই ঠিক ভাবে আসছেনা কেন্দ্র থেকে। স্পষ্টতই এই সম্পুর্ন ঘটনায় যে আরও বেশ কিছুটা বাড়ল এই কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত, তা বলাই বাহুল্য।