রাজনীতি ‘রাজনীতি’র জায়গায় আর সৌজন্য অন্য জায়গায়, হৃদ্যতার জায়গায়। সেটিই দেখা গেল বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অন্তিম যাত্রায়। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইট করে শোকজ্ঞাপন করেছেন। দু’জনেই চূড়ান্ত বিরোধী পক্ষ, কিন্তু সৌজন্যের খামতি দেখা যায়নি এই সময়ে। আজও সেই একই দৃশ্য দেখা গেল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অন্তিম যাত্রায়।
রাজনৈতিক দলগুলি মিলে মিশে যেন এক হয়ে গেল আজ। নেই কোন ভেদাভেদ, সবার উদ্দেশ্য যেন প্রাক্তন নেতাকে সম্মান জানানো। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। অপর দিকে উপস্থিত ছিলেন রাজতের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারিকে।
রাজনৈতিক জীবনে পরস্পরের যুযুধান ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেন। কিন্তু শেষ যাত্রায় রাজনীতি নয় দেখা গেল সৌজন্য বোধ। বরাবরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সৌজন্য বোদ পালন করতে দেখা গেছে। বিরোধী বলে সৌজন্য দেখাতে কখনও পিছপা হননি তিনি। দলকে সেই নির্দেশ দিয়ে আসছেন তিনি । এবারেও রাজ্যের সেই শোকের আবহে সেই সৌজন্যবোধই দেখা গেল।
অসুস্থ থাকার সময় মমতা একাধিকবার বুদ্ধদেবের বাড়িতে গিয়েছেন তাঁকে দেখতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”রাজনীতি আলাদা জায়গায় আর ব্যক্তিগত সম্পর্ক আলাদা জায়গায়। রাজনীতি আর মানবিকতা আলাদা। রাজনীতিও মানবিকতাকেই সবার আগে সম্মান জানায়। খুব খারাপ লাগছে। ওনার মুখটা মনে পড়ছে ওনার স্ত্রী খুব ভালো। যখনই ওনার বাড়িতে গিয়েছি, যত্ন করে সম্মান দিয়ে কথা বলতাম।”
মমতা জানিয়েছেন, ‘আমরা রাজ্য সরকারের তরফে থেকে ওর শেষযাত্রায় সমস্ত শ্রদ্ধা দিয়ে যাবতীয় সহযোগিতা করব। ওর দলের সিধান্ত অনুযায়ী যেখানে ওরা অন্তিমযাত্রায় ওকে নিয়ে যেতে চান, তার সুষ্ঠু দেখভালের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। যদি ওরা নন্দনে বা বিধানসভায় ওকে নিয়ে যেতে চান, আমরা সমস্ত সহযোগিতা করব। আর যেখানে ওরা ওকে শায়িত রাখার সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি সেখানেই গিয়ে ওকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে আনব’।