এখন এই করোনা পরিস্থিতিতে ডায়েটের কথা বলা অযৌক্তিক নয় । কারণ, করোনা ঠ্যাকাতে ফিট থাকাটা ভিষণভাবে প্রয়োজন । তবে অনেকেই শুধু বডি শেমিং-এর ভয়ে ডায়েট করছেন । বডি শেমিং-এর জ্বালায় নাজেহাল, চলছে জোরদার ডায়েট ? আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছেন জিরো ফিগার বানানোর ? আজকের জন্যে সব ভুলে যান । কারণ, আজ ‘ইন্টারন্যাশনাল নো ডায়েট ডে’ । আজকের দিনেও যদি আপনি ডায়েট চার্ট ফলো করেন তাহলে কেউ না হোক Mary Evans কিছুতেই আপনাকে ক্ষমা করবেননা । “মেয়েটা কি মোটা দেখ, বাবা মেয়ে না হাতি” অথবা “কি লিকলিকে চেহারা দেখ তার মধ্যে আবার এই সব গা দেখানো জামা পরেছে”, হ্যাঁ, এগুলোই হল বডি শেমিং, যা দিনে একবার না একবার ওই জিরো ফিগারে ফিট না হওয়া মেয়েদের শুনতেই হয় । কি ভাবছেন মশাই, আলবাদ শুনতে হয় । ছেলেদের যে শুনতে হয়না সেটা বলা ভুল, তবে তুলনামূলকভাবে মেয়েদের সংখ্যাটাই বেশি । কোথাউ আবার ভালো চেহারা না হলে তো বিয়েই হয়না । তো এই সব সামাজিক কুরুচিকর দৃষ্টিভঙ্গিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়ে যিনি প্রথমবারের জন্য ডায়েটিং-এর বিরোধিতা করেছিলেন তিনিই হলেন এই ম্যারি ইভানস ।
লোকে বলে চেহারা কমাতে হলে নাকি কম খেতে হবে । তবে আপনি কি জানেন, ডাক্তাররা কি বলেন ? তাঁরা বলেন বেশি বেশি খান কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খান । একেবারে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিলে আপনি মোটেও জিরো ফিগারের অধিকারিণী হবেননা বরং এ দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় নিতে পারেন । অবাক হলেও এটাই সত্যি । রোগা হওয়ার জন্যে মূলত আপনাকে কার্বোহাইড্রেট কম খেতে হবে । মানে ওই আলু, ভাত, রুটি জাতীয় দ্রব্য । আলু কম খেলে করোনার মত ভাইরাসকে কিছুটা হলেও আটকানো যায় এমনটাই ডাক্তাররা বলছেন । তবে ডিম, মাছ, মাংস, চকোলেট এসব আপনি খেতেই পারেন এমনকি এই মুহূর্তে পুষ্টিকর খাবার খাওটাই সবচেয়ে প্রয়োজন যা আপনার ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়িয়ে তুলতে পারে । আর না খেলে বা কম খেলে সেই ইমিউনিটি পাওয়ারই একেবারে তলানিতে এসে ঠেকতে পারে । যাঁদের ডায়াবেটিসের ধাত আছে তাঁরা চিনি থেকে বিরত থাকুন । বলতেই হয় প্রত্যেক ব্যক্তির ডায়েট চার্ট কিন্তু এক হবে না কারন প্রত্যেক মানুষের হরমোনাল রিয়েকশন আলাদা হয় । তাই নিজের মনের মত খাবারের লিস্ট না বানিয়ে ফিগার মেনটেইন করতে হলে অবশ্যই একবার ভালো ডায়েটিশিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেবেন ।
আঠারো শতকের গোড়ার দিকে ডায়েটিশিয়ান এবং ডায়েটিং শব্দের উত্থান ঘটে যখন জর্জ চেইন নামক এক মোটা ইংরেজী ডাক্তার কেবলমাত্র শাকসবজি এবং দুধ খেয়ে ওজন কমিয়েছিলেন । এই ঘটনার পর তিনি সবাইকে তার এই কৃতিত্বের কথা জানান এবং একটি রচনাও লিখে ফেলেন । যার ফলে মানুষ প্রভাবিত হয়ে নিজেকে আরও সুন্দর দেখানো এবং যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্যে এই ডায়েটিং-এর চর্চা শুরু করেন ।
শক্ত শক্ত ডায়েটের কথা আজ নাহয় নাই বললাম, বরং আজ ‘নো ডায়েট ডে’তে আপনাদের একটাই কথা বলব – খান, আরও বেশি করে খান । আপনি মোটা হন বা রোগা তাতে লোকের কিছু যায় আসে না ওঁরা শুধু পিএনপিসিতেই মজা পায় । তবে আপনি যদি তাঁদের কথায় কান দেন তবে আপনি মানসিক দিক দিয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারেন এটা একেবারে খাঁটি কথা । আপনি যেরকম আছেন সেরকমই থাকুন । নিজেকে ভালোবাসুন । আপনি যা তাতেই ‘বি কনফিডেন্ট’, দেখবেন নিজের চোখে দুনিয়াটাই পালটে গেছে । আর আজকের দিনে সমস্ত চোখ রাঙানি ভুলে গিয়ে না হয় একটা ডাবল চিজ পিজা বা বার্গারই খেয়ে ফেলুন, তবে সেটা যেন বাড়িতে বানানো হয় কারণ এই করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে বাইরের খাবার এক্কেবারে নয় । ভয় নেই আজকের দিনে কেউ আপনাকে কিছু বলবে না । তবে কাল থেকে কিন্তু সাবধান…………