লাগামহীন করোনার সংক্রমণ এর জেরে ভয়াবহ অবস্থার দিল্লির। মারাত্মক অক্সিজেন সংকটে নাজেহাল গোটা শহর। মিলছেনা রেমডেসিভির। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে মৃত্যু মিছিল। চরম ভোগান্তিতে রোগী ও তাদের পরিজনরা। কিন্তু “ইচ্ছা থাকলেও নাকি সাহায্যের উপায় নেই” এমনটাই দাবি রাজধানী দিল্লির জনপ্রতিনিধিদের। এহেন পরিস্থিতিতে নিজেদের ঘাড় থেকে দায়িত্বের বোঝা ঝাড়তে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আবেদন জানালেন আম আদমি পার্টির বিধায়ক শোয়েব ইকবাল।
মতিয়া মহলের গত ৬বারের বিধায়ক শোয়েব ইকবাল জানান “দিল্লির অবস্থা দেখে আমি ব্যথিত। খুব দুঃশ্চিন্তা হচ্ছে। মানুষ অক্সিজেন, ওষুধ পাচ্ছেন না। আমি ঘুমোতে পারছি না। আমার বন্ধু করোনা আক্রান্ত। হাসপাতালে থাকা সত্ত্বেও সে অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর পাচ্ছেনা। রেমডেসিভিরের জন্য প্রেসক্রিপশন থাকলেও মিলছেনা। ওঁর ছেলেরা হন্যে হয়ে সর্বত্র ঘুরছে। বিধায়ক হিসাবে আমি কোনও সাহায্যই করতে পারছিনা। খুব লজ্জা করছে। আমি ছ’বারের বিধায়ক। কিন্তু, কোনও নোডাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিনা। এই অবস্থায় দিল্লী হাই কোর্টের কাছে আমার অনুরোধ দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হোক, নাহলে রাস্তায় মৃতদেহ জমতে থাকবে।”
এর আগে দিল্লিতে অক্সিজেনের ভয়াবহ সংকটের কারণে এই অবস্থার কথা ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছিল নেটিজেনদের মধ্যে। এরই মধ্যে দিল্লিতে করোনা পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুললেন শাসকদলেরই বিধায়ক।
শোয়েব ইকবালের দাবিকে কেন্দ্র করে কেজরিওয়াল সরকারকে বারবার বিঁধছে বিজেপি ও কংগ্রেস।
বিজেপি মুখপাত্র হরিশ খুরানা বলেন ” শোয়েব ইকবাল শুধু বিধায়কই নন তিনি দিল্লি বিধানসভার সবচেয়ে বয়জ্যেষ্ঠও বটে, তাই ওঁর মন্তব্য হেলাফেলা করা যায় না। ওঁর দাবিকে সমর্থন করেই বলব দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হোক। রাজধানী কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল দিল্লির পরিস্থিতি মোকাবিলায় অক্ষম।”
কেজরিওয়াল সরকারকে বিঁধতে ছাড়েনি কংগ্রেসও। দিল্লি কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট অভিষেক দত্তের কথায় “করোনা মোকাবিলায় দিল্লির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও পরিষেবার দায়িত্ব সেনার নেওয়া উচিত। রাজ্যের বিরুদ্ধে rt-pcr পরীক্ষা ঠিকমতো না করার অভিযোগ রয়েছে। “
এহেন পরিস্থিতিতে ৫টি দল বদলানো শোয়েব ইকবালের এমন মন্তব্য কে ঘিরে আপের অন্দরমহলে অন্তর্দ্বন্দ্বের সিঁদুরে মেঘে দেখছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।