আসন্ন নির্বাচনের আগেই ফের তৃণমূলে ভাঙন । ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়লেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। মঙ্গলবার তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ ও মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। ছেড়েছেন দলের সমস্ত সাংগঠনিক পদও। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। দল ছাড়ার কারণ হিসেবে শুক্লা বলেছেন, রাজনীতি থেকে আপাতত ক্রিকেটেই মন দিতে চান তিনি। তবে বিধায়ক পদ এখনও ছাড়েননি। তবে কি অন্য কোন দলে যাচ্ছেন? না সেখানেও তিনি পরিস্কার জানিয়েছেন, এখন ওসব নিয়ে কিছু ভাবছেন না। ইতিমধ্যে তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়েছে। শুধু তাই নয়, তা রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেই এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন লক্ষ্মীরতনের ইস্তফা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘কেউ পদত্যাগ করতেই পারেন। তাতে কী আসে যায়।’’ পাশাপাশি তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লক্ষ্মীর প্রশংসা করে এদিন তিনি বলেন, ‘‘ও ভাল ছেলে। ইস্তফা দিয়েছে ঠিক আছে। কিন্তু এর মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই।’’ সেইসঙ্গে ‘দ্বিতীয় ইনিংস’-এর জন্য তাঁকে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মমতা।
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, আদর্শহীন দল বেশিদিন থাকে না। একইসঙ্গে লক্ষ্মীকে বিজেপিতেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস জোটের বিরুদ্ধে তৃণমূল থেকে তার পদত্যাগ দলের কাছে বড় ধাক্কা প্রমান হতে পারে এমনটাই দাবি করেছেন সৌগত রায়। এদিকে, পদ খালি হয়ে যাওয়ায় সদর হাওড়ার জেলা সভাপতি হচ্ছেন ভাস্কর ভট্টাচার্য। বর্তমানে তিনি হাওড়া পৌরসভার ৮ নং ওর্য়াডের সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। ইনি মন্ত্রী অরূপ রায়ের ঘনিষ্ঠ ও এলাকায় দক্ষ সংগঠক বলেই পরিচিত।
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন হাওড়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লা। উত্তর হাওড়া কেন্দ্রের নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জয় লাভও করেন তিনি। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অধীনে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। এক সময় জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য ছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। তিনি ছিলেন ডান হাতি ব্যাটসম্যান এবং মিডিয়াম পেস বোলার। ১৯৯৯ সালে বাংলার ক্রিকেট দলে অসাধারণ প্রদর্শনের জন্য তিনি জাতীয় দলে ডাক পান। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেটে প্রথমবার জাতীয় দলের হয়ে খেলেন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি দর্শকদের নজর কাড়েন। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাবে এবং সমকালীন অন্যান্য প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের যোগদানের কারণে খুব বেশি দিন জাতীয় দলে নিজের জায়গা ধরে রাখতে পারেন নি তিনি। তবে তিনি হার মানেন নি। তারপরও আইপিএলে বেশ কিছুদিন খেলেছিলেন তিনি। কলকাতা নাইট রাইডার্স, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত খেলা চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।