পঞ্চম দফার ভোটে মদন মিত্রকে বরাবরের মতোই ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেল| কামারহাটি তাঁর চেনা জায়গা, চেনা মাঠ এর সেখানেই দিনভর হুড খোলা জিপ চালিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন মদন। চেনা রাস্তায় চলার ফাঁকে কখনও বুথে ঢুকে, কখনও আবার লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা তিনি খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু বিকেলে রথতলায় পুরসভা সংলগ্ন কার্যালয়ে এসে বসার পরে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়লেন প্রার্থী মদন মিত্র। আচমকাই প্রার্থী মদন মিত্রর শ্বাসকষ্ট ও শরীরে অস্বস্তি দেখা দেওয়ায় তড়িঘড়ি চিকিৎসককে ডাকা হয়। নেবুলাইজার ও দেওয়া হয় তাঁকে। সমস্ত পরীক্ষার পরে চিকিৎসক জানান, সারা দিন খাওয়াদাওয়ার অনিয়মের ফলেই আচমকা শরীর খারাপ হয়েছে মদনের।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/04/850061-madan-mitra-new-1024x576.jpg)
গত বৃহস্পতিবারও একই রকম অবস্থা হয়েছিল। সেই সময়ে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল, মদনের শরীরে সোডিয়ামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেই জন্য ওষুধও চলছিল তাঁর।ভোটের দিন সকাল সাতটা নাগাদ দক্ষিণেশ্বরের ফ্ল্যাট থেকে বেরোনোর সময়ে তাই নিজেই বার বার সহকর্মীদের বলেছিলেন, ‘‘সোডিয়ামের ওষুধটা মনে করে নিস।’’ পিটুরিঘাটের গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন গান ও কবিতার লাইন আওড়ানোর পরেই রথতলার কার্যালয়ে ফিরে যেতে চান তিনি। ভবতারিণীর মন্দিরে পুজো দিয়ে সোজা চলে যান তিনি হীরালাল কলেজে ভোট দিতে। তার পরেই তিনি চালকের আসনে বসেন লাল রঙের হুড খোলা জিপে।
শুক্রবার রাতে এলাকায় বোমাবাজির অভিযোগ তুলে স্টিয়ারিং ঘোরানোর আগে মদন বললেন, ‘‘কাচ ঢাকা গাড়িতে লুকিয়ে নয়, প্রকাশ্যে ঘুরব। সাহস থাকলে আমায় সামনে মারুক।’’ তারপর তিনি বলেন, ‘‘যতই নাড়ো কলকাঠি, পাবে নাকো কামারহাটি’’।কখনও আবার বললেন, ‘‘মুখে জয় শ্রীরাম, ন’শো টাকা গ্যাসের দাম।’’ তারপর আড়িয়াদহ রামানন্দ চ্যারিটি বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে একটি বুথে ঢোকার সময়ে মদনকে বাধা দেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। জানতে চান, মদনের পাঞ্জাবির বুকপকেটে লাল মতো জিনিসটি কী? খেপে গিয়ে মদন বলে ওঠেন, ‘‘ইয়ে অ্যাটম বম্ব হ্যায়!’’ তার পরেই তাঁর পকেটে থাকা বিভিন্ন দেবতার ছবি বার করে ভোটারদের দেখিয়ে বলেন, ‘‘আমার পকেটে আমার ভগবান রয়েছেন। ওঁরা প্রার্থীর বুকে হাত দিচ্ছেন!’’ বিভিন্ন জায়গায় তিনি গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গেও বচসায় জড়ান। নিজস্ব ভঙ্গিতেই বলেন, ‘‘মাস্ক খুলছি, আমার মুখটা দেখে নাও।’’ তারপর দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ দক্ষিণেশ্বরের ফ্ল্যাটে মদন মিত্র ফিরে আসেন বিশ্রাম নিতে। তিনটে নাগাদ ফের বেরোন কিন্তু তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি| সিপিএম প্রার্থী সায়নদীপ মিত্র বলছেন, ‘‘ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।”