বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের। মাথা মুড়িয়ে, জুতোর মালা পরিয়ে বিবস্ত্র অবস্থায় গোটা গ্রাম ঘোরানো হল তরুণীকে। আর এই অপমান সহ্য করতে না পেরেই বাড়ি ফিরে আত্মঘাতী হলেন বছর ২৩এর তরুণী । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুমের বেতাগা গ্রামে।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/05/WhatsApp-Image-2021-05-08-at-17.06.38.jpeg)
জানা যাচ্ছে, এক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ত্রিপুরার বছর ২৩এর ওই তরুণী গৃহবধূ। প্রেমিকের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের একটি ভিডিও ফাঁস হওয়ার পরই ভরা বাজারের এক সালিশি সভায় পর্দা টাঙিয়ে গোটা গ্রামকে দেখানো হয় সেই ভিডিও।
তারপর ওই তরুণীকে উচিত শাস্তি দিতে জুতোর মালা নিয়ে তাঁর বাড়িয়ে হাজির হয় গ্রামের লোকজন। সেখানেই তাঁর মাথা ন্যাড়া করিয়ে পরানো হয় জুতোর মালা । এরপর বিবস্ত্র করে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঘোরানো হয় গোটা গ্রামে। এই অপমান মেনে নিতে পারেননি ওই তরুণী। বাড়ি ফিরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
পুরো ঘটনার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে স্যোশাল মিডিয়ায়। তা দেখে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা রজু করে ত্রিপুরা হাইকোর্ট। অভিযোগ জানানো হয় তরুণীর পরিবারের তরফেও। প্রধান বিচারপতি এএ কুরেশি ও বিচারপতি এস তলাপাত্র স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে রাজ্যের মুখ্য সচিব, ডিজিপি, এসপি ও এসডিপিও-কে গোটা ঘটনার তদন্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেওয়া হয় চার মহিলা সহ সাতজনকে।
এই ঘটনাকে “মানবাধিকারের সম্ভাব্য সর্বাধিক লঙ্ঘন” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। যে ভিডিও ফুটেজটি দেখানো হয়েছিল, তদন্তের স্বার্থে তাও চেয়ে পাঠিয়েছে আদালত। দক্ষিণ ত্রিপুরার পুলিশ সুপার কুলওয়ান্ত সিং জানান, “পুলিশ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে এবং কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান রেকর্ড করেছে। তার প্রেক্ষিতেই এখনও অবধি সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে”। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই পরকীয়া ফৌজদারি অপরাধ নয়, এই মর্মে রায় দিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। এর পরই এক তরুণীর এহেন হেনস্থা ও নির্যাতনের ঘটনায়, কোথায় দাঁড়িয়ে সমাজ বারবার উঠছে প্রশ্ন।