১৫০-১৬০ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘তাউকতে’ । এমনকি গতিবেগ বাড়তে পারে ১৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টাতেও বলেই জানাচ্ছে দিল্লির মৌসম ভবন । ৬ উপকূলবর্তী এলাকায় ২৪ ঘণ্টা ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার জেরে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন এবং তছনছ হয়েছে ৭৩টি গ্রাম, এমনটাই জানিয়েছে কর্নাটক বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ৷ স্যাটালাইট থেকে ধরা পড়া ছবি অনুযায়ী এর ব্যাস প্রায় ৪ কিমি। এছাড়াও অতি ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি, উপড়ে গিয়েছে একাধিক গাছ। লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে কেরলের ৯ জেলায় । অন্যদিকে মৌসম ভবনের তরফে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে । যেখানে আজ থেকে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । প্রভাব পড়েছে গোয়ার পানাজিতেও, শুরু হুয়েছে প্রবল বৃষ্টিপাত । গুজরাত উপকূলে আগাম মঙ্গলবার আছড়ে পড়তে পারে এই ঝড় বলেই জানিয়েছে মৌসম ভবন । জানা গেছে, গোয়ার পানাজি থেকে ১৫০ কিমি, দক্ষিণ মুম্বই থেকে ৪৯০ কিমি এবং গুজরাত থেকে ৭৩০ কিমি দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড় ।
অন্যদিকে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা নিজে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন । দিল্লিতে বিশেষ বৈঠকে রয়েছেন আমিত শাহ এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে । গতকাল তাউকতে’ নিয়ে জরুরী বৈঠক সারেন মোদী । যেখানে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার রাজ্যগুলির প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি বিপদ প্রবন এলাকা থেকে মানুষজনকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে আসার কড়া নির্দেশও দিয়েছেন তিনি । ঝড়ের আগাম সতর্কতয় ইতিমধ্যেই ৫৮০ জন করোনা রোগীকে কোভিড সেন্টার থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । শহরের প্রান্তে পুণে ও গোয়ায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনি পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ।সতর্কতা হিসেবে উপকূলবর্তী অঞ্চলে জারি রয়েছে রেড অ্যালার্ট। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে ৫৩ টি দলকে নামানো হয়েছে। এরমধ্যে ২৪ টি দল বিপর্যয়ের আগে থেকেই পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং দুর্ঘটনা এড়াতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এছাড়াও ২৯ টি দল পাঁচটি রাজ্যের কেরল, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে ট্যুইটের মাধ্যমে জানিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) প্রধান সত্য প্রধান। তিনি এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছেন, যা হল-
১. গুজবে কান দেবেন না এবং নিজেও গুজব ছড়াবেন না।
২. আবহাওয়া সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের আপডেট পেতে রেডিও, খবরের কাগজ, নিউজ চ্যানেলে চোখ রাখুন।
৩. যথাসম্ভব মোবাইলে ফুলচার্জ দিয়ে রাখুন, ঝড়ের সময় বাড়ির সমস্ত কারেন্টের লাইন বন্ধ রাখুন।
৪. গ্যাসের লাইন বন্ধ রাখুন ।
৫. ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে আগে থেকে সরকারী ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিন।
৬. প্রয়োজনীয় নথি, কাগজপত্র, টাকাপয়সা ওয়াটারপ্রুফ ফাইলে রাখুন।
৭. ঝড়ের সময় কোনও ভাঙাবাড়ি বা গাছের নীচে দাঁড়াবেন না, যতদ্রুত সম্ভব নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান ।
৮. হাতের কাছে মোবাইল, টর্চ, চার্জার লাইট রেডি রাখুন।
৯. ঝড়ের সময় বাড়ির সমস্ত জানলা দরজা বন্ধ রাখুন।
১০. ঝড় চলাকালীন সময়ে বা ঝড়ের পরে জল ফুটিয়ে পান করুন ।