করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বেসামাল গোটা দেশ। করোনা পজেটিভ এর চক্করে ‘পজেটিভ’ শব্দটাতেই যেন ভয় ধরে গেছে আপাতত দেশবাসীর। এই পরিস্থিতির মাঝে সত্যি কারের ‘পজেটিভ’ খবর শোনালেন AIIMS এর ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/04/936182-903396-aiims-delhi-director-1024x576.jpg)
অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া দেশে দাবানলের মত বাড়তে থাকা করোনা আতঙ্কে কিছুটা হলেও লাগাম দেওয়ার উদ্দেশ্যে এদিন নিজের বক্তব্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে “করোনা নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।মাত্র ১৫-২০% করোনা আক্রান্তের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। হাসপাতাল বা অক্সিজেনের দরকার হচ্ছে একমাত্র তাঁদেরই।” তিনি বলেন “অত্যাধিক পরিমানে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন জনগণ। যার ফলে অক্সিজেন, রেমডেসিভির ইত্যাদির মত অত্যাবশকীয় জিনিস পত্র বাড়িতে মজুত করছেন তাঁরা। এর ফলেই বাজারে তৈরি হচ্ছে এই ভয়াবহ ঘাটতি।” ডা. রণদীপ গুলেরিয়া দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন যে “আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ৮০-৮৫% আক্রান্তের ক্ষেত্রে করোনা একটি সাধারণ ফ্লু এর মতন।তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা, অক্সিজেন বা রেমডেসিভির কোনোটিরই দরকার নেই। বাড়িতে থাকা, যোগব্যায়াম, পুষ্টিকর খাওয়া দাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমেই অতি সহজে সুস্থ হয়ে উঠবেন তাঁরা।”
এদিন মধ্যম রকম আক্রান্ত করোনা রোগীদের শ্বাসষ্টের জন্য তাঁদেরকে পরামর্শও দেন তিনি। তিনি বলেন যে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে খানিকক্ষণ শ্বাস নিলেই কমে যাবে সামান্য শ্বাসকষ্ট। দেশবাসীকে রেমডেসিভির এবং অক্সিজেনের অপব্যবহার না করতে বারবার অনুরোধ করেন ডাক্তার রণদীপ গুলেরিয়া। অক্সিজেনের ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে সাধারণ সময়ে অক্সিজেনের যা চাহিদা থাকে, এই পরিস্থিতিতে তা বেড়ে গেছে প্রায় ৭গুন। যার ফলে ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু ভয় পাওয়ার কারণ নেই। স্টিল প্ল্যান্ট গুলির কাছে পর্যাপ্ত অক্সিজেন মজুত রয়েছে।বিভিন্ন হাসপাতালে সেগুলি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার”।
মেদান্তর চেয়ারম্যান ড. নরেশ ত্রিহান,AIIMS এর মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. নভীৎ উইগ, স্বাস্থ্য পরিসেবা দপ্তরের প্রধান ড. সুনীল কুমারের মতন দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসকর এদিন উপস্থিত ছিলেন একটি ভিডিও কনফারেন্সের।
ড. রণদীপ গুলেরিয়ার কথাকে সমর্থন জানিয়ে ড. নভীৎ উইগ বলেন ” আমরা আগামী তিন সপ্তার মধ্যে করোনা আক্রান্তের হারকে নামিয়ে আনতে পারি মাত্র ৫%। একমাত্র যদি আমরা সকলে সমস্ত করোনা বিধি মেনে চলি, তাহলে অত্যন্ত সহজেই সম্ভব এটি।” ডা. ত্রিহান জানান ৯০% করোনা রোগীই বাড়িতেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন যদি সঠিক সময়ে সঠিক ওষুধ এবং চিকিৎসা করা হয়। তিনি বলেন ” আমি পরামর্শ দেব,করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আশার পরেই নিজের নিকটবর্তী ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। বেশি দৌড়দৌড়ি করার কোনো দরকার নেই। সমস্ত ডাক্তাররাই সমস্ত করোনা বিধি জানেন। তিনিই আপনার চিকিৎসা করবেন এবং যথোপযুক্ত ওষুধ দেবেন”।
এই মুহুর্তে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বেসামাল দেশ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে করোনার সাথে লড়তে লড়তে ধুঁকছে দেশ। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে আতঙ্ক। এই সময়ে দাঁড়িয়ে AIIMS কর্তাদের এই বার্তা কার্যতই সামান্য হলেও স্বস্তির হাওয়া এনে দিক দেশবাসীকে। আজকের এক বার্তার পর একটু হলেও আবার আশার আলো দেখতে শুরু করল আপামর ভারতবাসী।