দেশজুড়ে দাবানলের মনই বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। কিন্তু নিজেকে আর নিজের পরিবার, পরিজনদের রক্ষা করতে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার ভূমিকা কী হওয়া উচিত এ সময়? কীভাবে আপনি পারবেন এই ভাইরাস প্রতিরোধ করতে? পাশাপাশি অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে কোথায় যোগাযোগ করবেন ? আসুন জেনে নিই
বারবার হাত ধোয়া
বার বার হাত ধুতে হবে সাবান দিয়ে। একথা প্রমাণিত যে সাবান–জল দিয়ে ভালো করে হাত ধুলে করোনা ভাইরাস হাত থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। হাতে ময়লা বা নোংরা দেখা না গেলেও বারবার হাত ধুতে হবে। বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তির পরিচর্যার পর, হাঁচি–কাশির পর, খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর, পশুপাখির পরিচর্যার পর ধুতেই হবে হাত।
দূরে থাকুন
যেকোনো সর্দি–কাশি, জ্বর বা অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। কেন? আর সব ফ্লুর মতোই এই রোগও কাশির ক্ষুদ্র ড্রপলেট বা কণার মাধ্যমে অন্যকে সংক্রমিত করে। তাই যিনি কাশছেন, তাঁর থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। ইতিমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
নাক–মুখ স্পর্শ নয়
হাত দিয়ে আমরা সারা দিন অনেক কিছু স্পর্শ করি। সেই বস্তু থেকে ভাইরাস হাতে লেগে যেতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন। অপরিষ্কার হাত দিয়ে কখনোই নাক–মুখ–চোখ স্পর্শ করবেন না।
কাশি হলে সাবধানতা মেনে চলুন
নিজে রেসপিরেটরি হাইজিন মেনে চলুন, অন্যকেও উৎসাহিত করুন। কাশি বা হাঁচির সময় নাক, মুখ রুমাল বা টিস্যু, কনুই দিয়ে ঢাকুন। টিস্যুটি অবশ্যই ঠিক জায়গায় ফেলুন।
প্রয়োজনে ঘরে থাকুন
ঘরে থাকুন।একান্ত দরকার ছাড়া বাইরে বেরোবেন না। বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য অতি অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। বাইরে বেরোলে হাত ধোয়ার সুযোগ না থাকলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
ভ্রমণে সতর্ক থাকুন
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
অভ্যর্থনায় সতর্কতা
কারও সঙ্গে হাত মেলানো (হ্যান্ড শেক), কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন।
স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নিন
কোনো কারণে অসুস্থ বোধ করলে, জ্বর হলে, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য নিন।
সঠিক তথ্য জানুন
সঠিক তথ্য পেতে নিজেকে আপডেট রাখুন। গুজবে কান দেবেন না। আপনার স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকের কাছে তথ্য জানতে চান।
বাড়ি পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করুন
বাড়িতে সবাইকে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিবার খাবার রান্না বা প্রস্তুতের আগে ও পরে, খাবার খাওয়ার আগে ও পরে, বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে, বাইরে থেকে বাসায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে সাবান-জল দিয়ে হাত ধুতে হবে। সাবান-জল তাৎক্ষণিকভাবে না পাওয়া গেলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। এ ছাড়া দরজার হাতল, নব, টেলিফোন, রিমোট, সুইচসহ যেসব বস্তু বারবার ব্যবহৃত হয়, সেগুলো নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
বাড়ির প্রতিটি ঘরে টিস্যু বা কিচেন রোল রাখুন, যাতে কাশি বা হাঁচির সময় হাত বাড়ালেই টিস্যু পাওয়া যায়। টিস্যু ও ময়লা ফেলার পাত্রটি ঢাকনাযুক্ত হলে ভালো হয়।
আশেপাশের বাড়িতে কোনো প্রতিবেশী আক্রান্ত হলে কী করবেন
▪️মোবাইলে বা স্যোসাল মিডিয়ার সাহায্যে খোঁজ খবর রাখতে চেষ্টা করুন।
▪️কিছু দরকার কিনা জেনে সাধ্যমতো সাহায্য করুন।
▪️রোজ অল্প কিছু জিনিসপত্র, খাবার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
▪️দরকারে পাশে দাঁড়ান।মানসিকভাবে জোর দিন।
কী করবেন না
▪️ করোনা আক্রান্ত রোগী ও তাঁর পরিবারকে অপরাধী বলে দেগে দেবেন না।
▪️পাড়ায় থাকতে বা ঢুকতে বাধা দেবেন না।
▪️অযথা গুজব ছড়িয়ে তাঁদেরকে ভীত করবেন না।
▪️এলাকা থেকে উৎখাত করার চেষ্টা করবেন না।
▪️হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় বা অ্যাম্বুলেন্স এলে চোখ বুঝে স্বার্থপরের মতন থাকবেন না।
নিজে অসুস্থ বোধ করলে এই লক্ষণগুলো সনাক্ত করুন
বেশি তাপমাত্রা, ক্রমাগত কাশি, মুখের স্বাদ হারিয়ে যাওয়া, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, মাথা ব্যথা, গলা খুসখুস করা ও সারা শরীরে ব্যথা- এগুলো হল করোনার কিছু প্রাথমিক লক্ষণ।
জ্বর, মুখের স্বাদ পাল্টে যাওয়া, ঘ্রাণ শক্তি কমে যাওয়া, ক্রমাগত কাশি এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারলেই দ্রুত সেল্ফ আইসোলেশনে চলে যাওয়া উচিত। করোনার প্রাথমিক লক্ষণগুলো দেখা দিলে বিশেষ প্রকারের চিকিৎসার চেয়ে বিশ্রাম ও খাওয়া দাওয়া জরুরি।
আইসোলেশনে কীভাবে থাকবেন: করোনার লক্ষণ গুলো বুঝতে পারলে একটি আলাদা ফাঁকা ঘরে চলে যান। যতক্ষণ না কোনো বিশেষ কারণ ছাড়া চিকিৎসাগত কারণে কারো সঙ্গে দেখা করা জরুরি ততক্ষণ কোনো কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে বেরোবেন না। এমনকি কোন করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির সান্নিধ্যে আসার পরেও এমনটা করবেন। অন্তত ১৪দিনের জন্য আইসোলেশন পিরিয়ডে থাকা উচিত। বাড়ির সুস্থ সদস্যদের কাছ থেকে দূরে থাকুন।
কোন বিষয়গুলো রাখবেন মাথায়: আইসোলেশন এর জন্য বাড়ির এমন একটি ঘর বেছে নিন যেখানে ঠিকঠাক বাতাস চলাচল হয় কেউ আপনাকে খাবার ও অন্য সামগ্রী দিতে হলে তার সঙ্গে যতটা সম্ভব শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে পারেন ততই ভালো। বাড়ির অন্যদের ব্যবহার করা কোন সামগ্রী আপনি ব্যবহার করবেন না, হাঁচি-কাশির সময় মুখে কাপড় চাপা দেবেন না, কোনভাবে হাত লেগে গেলে হাত এবং সেই সময়ে সারা শরীর স্যানিটাইজ করে নেবেন। নিজের ঘরেও প্রয়োজনে মাস্ক পরে থাকবেন।
বাথরুমের ব্যবহার: এমন অবস্থায় নিজের জন্য আলাদা একটি বাথরুম রাখবেন। যদি তা সম্ভব না হয় তবে কিছু জিনিস মাথায় রাখবেন। নিজের টাওয়েল, ব্রাশ এবং পরিধান করা পোশাক আলাদা রাখবেন। যতবার বাথরুম ব্যবহার করবেন ততবার বেরিয়ে আসার সময় ভালোভাবে জল ঢালবেন। চেষ্টা করবেন সংক্রামিত ব্যক্তি যেন সবার শেষে বাথরুম ব্যবহার করেন।
রান্নাঘরের ব্যবহার: সংক্রমিত ব্যক্তির কক্ষে তার খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নিজের বাসন নিজেই পরিষ্কার করুন। বাসনগুলো উষ্ণ জল এবং ডিটারজেন্ট দিয়ে ধোয়া উচিত। রান্নাঘর ব্যবহারের পর তা অবশ্যই স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
অতিরিক্ত অসুস্থ বোধ করলে হাসপাতালে যান। সামান্য অসুস্থ হলেই হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই।৮৫% করোনা আক্রান্ত রোগীই বাড়িতে থেকেই সুস্থ হতে সক্ষম।
এই পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কী করবেন :
▪️করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যা কিছু জানার তা আপনি ইতিমধ্যেই জানেন। তাই বারবার টিভিতে খবর দেখে আতঙ্কিত হবেন না। সংবাদ দেখা থেকে কিছুটা হলেও বিরত থাকুন।
▪️যোগ ব্যায়াম করুন।
▪️পছন্দসই রান্না করুন। বাড়ির সবাই একসাথে আড্ডা দিন।
▪️বাগান করুন। গাছেদের সাথে থাকুন।
▪️নিজের শখকে এবং নিজেকে সময় দিন।
▪️গুজবে কান দেবেন না।
অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে কোথায় যোগাযোগ করতে পারেন
দমদম – 9007427926/9748613508/
উত্তরপাড়া – 794739645
কোন্ননগর – 8961186149
ডানকুনি – 9903374257/9804037559
শিরামপুর -9038840685/9874539132/9804006628
কুঁদঘাট – 9748428821/8420083427
সাহাগঞ্জ – 9432257213
কলকাতা
শ্যামবাজার – 7003805921/9830817350
হেদুয়া – 8910044138/8777050752
মানিকতলা – 9674872495/8420409857
কলেজস্ট্রিট/রাজাবাজার – 8777259428/6290328290
শিয়ালদহ/বৌবাজার – 8981852841
ধর্মতলা – 9007023274
গরিয়াহাট/গোলপার্ক – 8013801380
খিদিরপুর – 8582999273/7980686417
বিজয়গড়/টালিগঞ্জ – 8017427877/9875516377
গার্ডেনরিচ – 8697585404/7003553967
মেটিয়াবুরুজ – 9230211775
যাদবপুর – 8017427877/9875516377
পর্ণশ্রি/সাহাপুর – 7980113419
সখেরবাজার – 9007634275/9123877156
বকুলতলা – 6290043498
জোকা/ঠাকুরপুকুর – 9903048707
সরশুনা – 6291547428
রিপন স্ট্রিট – 9007023274
পার্ক স্ট্রিট/ভবানীপুর – 8910288456
অন্যান্য জিজ্ঞাস্য – 8777569965/9674005340