‘The press thus gradually became the mouthpiece of suffering people’… সংবাদমাধ্যম এককথায় যাকে বলে গনতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। দেশীয় রাজনীতি থেকে শুরু করে বৈদেশিক কূটনীতি সমস্ত কিছুর নিরপেক্ষ বিচার বিশ্লেষণের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে সেই সংবাদ মাধ্যম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের ধরণ বদলালেও পাল্টায়নি আজও তার জনগনের সামনে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সত্যকে তুলে আনার ধরন। আজ জাতীয় সংবাদমাধ্যম দিবসে ফিরে দেখা যাক ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বকে।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রে একমাত্র ‘সংবাদপত্র’ই বিদ্যমান ছিল। ইলেকট্রনিক মিডিয়া কিংবা ডিজিট্যাল মিডিয়া তখন কল্পনাতীত বিষয়। সেই সময়ে ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে সংবাদপত্রের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।সংবাদপত্রের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল প্রতিবাদের মধ্যে দিয়েই।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/11/WhatsApp-Image-2021-11-16-at-8.21.51-PM.jpeg)
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একটা দেশের আর্থ সামাজিক পরিবর্তনে সংবাদপত্র কী ভূমিকা নিতে পারে বিশ্ববাসী ফরাসি বিপ্লবের সময় তার প্রথম টের পেয়েছিল । ফ্রান্সের বুর্বোন রাজবংশের বিরুদ্ধে সেই দেশের সংবাদপত্র লাগাতার কলম ধরেছিলো। এই সংবাদ মাধ্যমকে সেই দেশের প্রথম সারির লেখক শিল্পীরা ব্যবহার করেছিলেন । ঠিক একইভাবে পরাধীন ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসকের বিরুদ্ধে লাগাতার জনমত গড়ে তুলতে ভারতীয় সংবাদপত্র অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা নিয়েছিল । সেই সময়ের সমস্ত প্রথম সারির জাতীয় নেতারা দাদাভাই নৌরোজি থেকে শুরু করে মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহেরু, আজাদ, প্যাটেল, লাল বাল পাল, অরবিন্দ, নেতাজি, চিত্তরঞ্জন কে ছিলেন না সেই তালিকায়। তৎকালীন সময়ের সংবাদপত্র ছিল নিজেদের বক্তব্য দেশবাসীর কাছে তুলে ধরার একমাত্র মাধ্যম। এমনকি শিক্ষা সংস্কৃতি জগতের মানুষজনও হাতিয়ার করেছিলেন সংবাদপত্রকে । রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্যাসাগর, মধুসূদন,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিবেকানন্দ সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব কলম ধরেছিলেন।
![](https://mbharat.in/wp-content/uploads/2021/11/uzguyGS7MHuztEK1UAj61XyIvV5IQ0HgPrtzWf5CFjg-1024x576.jpeg)
সেদিনের সংবাদপত্র শুধু রাজনৈতিক সংবাদ পরিবেশন করে নি, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রেও । রামমোহন রায়ের ‘সংবাদ কৌমুদি ‘, দিকদর্শন, সমাচার দর্পন, সংবাদ প্রভাকর, বেঙ্গল গেজেট, সোমপ্রকাশ, তত্ত্ববোধনী, প্রবাসী, বন্দে মাতরম, নিউ ইন্ডিয়া,ধূমকেতু, লাঙল, অমৃতবাজার, যুগান্তর , বসুমতী একে একে বহু সংবাদপত্র ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে। সাপ্তাহিক থেকে পাক্ষিক, দৈনিক সমস্ত ধরনের পত্র পত্রিকার একমাত্র লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ তাড়ানো। আর বারে বারে ব্রিটিশ সরকার আইন পাশ করে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করতে চেয়েছে । এমনকি সংবাদপত্রের মালিক সম্পাদকরা গ্রেফতার পর্যন্ত হয়েছেন তবুও থেমে থাকেনি সংবাদমাধ্যম।সেই ঐতিহ্য অবশ্য ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আজও বহন করে চলেছে।