মৃত্যুপুরী ওয়েনাড়। চারিদিকে শুধুই স্বজনহারানোর কান্না। তার মধ্যেই হন্যে হয়ে প্রাণের খোঁজ করে চলেছে সেনা বাহিনী। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন দাবি করেছিলেন যে, ধ্বংসস্তূপের নীচে হয়তো আর কেউ বেঁচে নেই। তবে হাল ছেড়ে দেয়নি সেনা। শুক্রবার কাদার নীচ থেকে জীবিত দুজন মহিলা ও দুজন পুরুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে ড্রোনও ব্যবহার করা হচ্ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও সেনাবাহিনী। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বেইলি ব্রিজ তৈরি করেছে ভারতীয় সেনা। তবে পর্যাপ্ত সামগ্রী ও ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
বৃহস্পতিবারই ওয়েনাড়ে প্রিয়াঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি। সাংবাদিকদের সামনে রাহুল বলেন, ”এখানের যা অবস্থা চোখে দেখা যাচ্ছে না। এরা যা হারিয়েছে তা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়, তবে তাদের প্রাপ্যটুকু পাইয়ে দেওয়ার যথাসম্ভব চেষ্টা করব।” রাহুল দাবি করেন, ”কেন্দ্র সরকার এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলে আখ্যা দিক। তবে জানি না সরকার কি সিদ্ধান্ত নেবে।” প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘খুব খারাপ অবস্থা ওয়েনাড়ে।’
এডিজিপি (কেরল) এম আর অভিজিত কুমার শুক্রবার জানান, ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ৩০৮। তবে সরকারি পরিসংখ্যান মতে মৃতের সংখ্যা ২০১। এখনও নিখোঁজ ৩০০-র বেশি মানুষ। ৩৪৮টি ঘর ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। এনডিআরএফ, উপকূলরক্ষী বাহিনী, নৌবাহিনী, এমইজি, স্থানীয় পুলিশ, বন দফতরের কর্মীরা একযোগে কাজ করছেন।
কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ জানিয়েছেন, ওয়েনাড় হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগ সমস্ত রকম পরিষেবা প্রদান করছে। এয়ারলিফটে করে মাঞ্জেরির মেডিক্যাল কলেজ সহ কোঝিকোড়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯৯টি লাশের ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ১৩০টি শরীরের অংশের ডিএনএ নমুনা নেওয়া হয়েছে। আহতদের মানসিক সুস্থতা দেওয়ার জন্য ১২১ জনের মনোরোগ বিশেষজ্ঞের একটি দল গঠন করা হয়েছে।
ওয়েনাড়ের কালেক্টর মেঘাশ্রী ডি আর সাংবাদিকদের জানান, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মুন্ডাকাই ও চুরারমালা। এই দু’টি অঞ্চলকে ৬টি জোনে ভাগ করে স্নাইফার কুকুর সহ ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চলছে।